Thank you for trying Sticky AMP!!

টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানি ও সে দেশ থেকে আমদানি দুই দিন ধরে বন্ধ আছে। বন্ধ রয়েছে তিন দিন ও এক দিনের বর্ডার পাসের মাধ্যমে যাত্রী পারাপারও। এদিকে সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করেছে বিজিবি। এ ছাড়া নাফ নদীতে মাছ ধরাও বন্ধ আছে।
গত রোববার ভোরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্তের কাছে রক্ষীদের তিনটি ছাউনিতে সমন্বিত হামলায় অন্তত ১৪ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই পুলিশ। হামলার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনকে (আরএসও) দায়ী করেছেন মিয়ানমারের একজন কর্মকর্তা।
বিজিবি ও স্থলবন্দর সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ও সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, মিয়ানমারে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারেন, সে ব্যাপারে বিজিবির সহায়তা চেয়েছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। সেই অনুরোধের পর টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নাফ নদীতে বাংলাদেশি জেলেদের মাছ শিকার না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বলেন, টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ায় অবস্থিত এক দিনের ট্রানজিট ঘাট দিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে লোকজন পারাপারও বন্ধ আছে।
গতকাল সোমবার এক দিনের ট্রানজিট ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জেটিতে যাত্রীবাহী কয়েকটি ট্রলার খালি পড়ে আছে। মিয়ানমার-বাংলাদেশ নৌপথে চলাচলকারী ট্রলার মালিক ও স্থলবন্দর নৌমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নেজাম উদ্দিন বলেন, রোববার থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে যাত্রী পারাপার বন্ধ আছে।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে স্থলবন্দরের জেটিতে কোনো পণ্যবাহী ট্রলার আসেনি।
স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকায় স্থলবন্দরের গুদামে মজুত রাখা পণ্যের জন্য অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারও দৈনিক ২০ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
জানতে চাইলে টেকনাফ স্থলবন্দরের কাস্টমস সুপার মো. আবদুল মান্নান বলেন, দুই দিন ধরে মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি। এ ছাড়া রপ্তানি পণ্য নিয়ে কোনো ট্রলার মিয়ানমারে যায়নি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিউল আলম বলেন, মিয়ানমারের ঘটনার পর টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।
গতকাল নাফ নদীতে কোনো ধরনের মাছ ধরার নৌকা দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী, হ্নীলার এইচ কে আনোয়ার ও সাবরাংয়ের নুর হোসেন বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নাফ নদীতে মাছ শিকার না করার জন্য এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
এদিকে টেকনাফ স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্রের পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, বর্ডার পাসের মাধ্যমে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় মিয়ানমারে ১৮ জন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও দুটি শিশু আটকা পড়ে। গতকাল সন্ধ্যায় একটি ট্রলারে করে তাদের ফেরত আনা হয়।