Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রেনের টিকিট এখনো 'সোনার হরিণ', ছাদে যাত্রী

প্রথম আলো ফাইল ছবি।

ট্রেনের প্রতিটি কামরায় ওঠার দরজার পাশে লেখা রয়েছে, ‘ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ আইনত দণ্ডনীয়’। আর এই লেখা মাড়িয়েই যাত্রীরা উঠে যাচ্ছেন ট্রেনের ছাদে। রাজশাহী থেকে বিশেষ করে রাতের ট্রেনের যাত্রীরা ছাদে উঠছেন। ইঞ্জিন বাদে সব কটি কামরার ছাদেই উঠছেন তাঁরা, কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনোই ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। যাত্রীরাও টিকিট না কেটে ঝুঁকি নিয়ে উঠছেন ছাদে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের পরে ঢাকামুখী যাত্রীদের কাছে ট্রেনের টিকিট এখনো ‘সোনার হরিণ’ রয়ে গেছে। ট্রেনের একজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা নিজেরাই এখনো টিকিট চেয়ে পাচ্ছেন না। আরও দু-এক দিন এই চাপ থাকবে। এই চাপের কারণে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত রাজশাহী থেকে একমাত্র বনলতা এক্সপ্রেস ছাড়া অন্য কোনো ট্রেন সময়মতো ছাড়তে পারেনি। গতকাল সকালে ঢাকাগামী সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট এবং বিকেলে পদ্মা এক্সপ্রেস ১০ ঘণ্টা ১০ মিনিট দেরিতে ছেড়ে গেছে।

টিকিট না পেয়ে শ্রমজীবী মানুষেরা বাধ্য হয়ে লক্কড়ঝক্কড় বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছেন। এসব বাসেও ভাড়া ৬০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। টাকার অভাবে বাধ্য হয়ে তাঁদের অনেকে রাতে ট্রেনের ছাদে উঠে ঢাকায় যাচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকাগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনও নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারেনি। রাত ১১টা ২০ মিনিটের এই ট্রেন ছাড়ে রাত পৌনে একটায়। এই ট্রেনের ছাদজুড়ে ছিল যাত্রীদের ভিড়। ট্রেনের সব কামরার ছাদের মাঝখানের সমতল জায়গায় যাত্রীর সারি দেখা গেছে। এই যাত্রীদের অনেকে তখনই ছাদের ওপরে বিছানা করে শুয়ে পড়েছেন। অনেকেই বসে ছিলেন। যাত্রীরা ছাদে উঠলেও রেলওয়ের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাকে তাঁদের বাধা দিতে দেখা যায়নি। গত সোমবার রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী ট্রেনের ছাদে ভ্রমণের সময় ডিশ লাইনের তারে বেঁধে একজন যাত্রী নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরপরেও ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠা বন্ধ হয়নি।

ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ—এ বিষয়ে কী আইন আছে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খন্দকার শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেনের টিকিটের গায়েই তো লেখা রয়েছে, টিকিট ছাড়া ট্রেন ভ্রমণ নিষিদ্ধ। ছাদে ভ্রমণের জন্য তো কোনো টিকিট দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, এটা সাধারণ যুক্তির কথা। সাধারণ নিয়ম। তবে বেসরকারি লোকজন, যাঁরা ট্রেন ইজারা নিয়ে চালান, তাঁরা অতিরিক্ত লাভের আশায় ট্রেনের ছাদে যাত্রী তুলতে পারেন। তাঁরা ছাদের টিকিটও দিয়ে থাকেন। তবে সেটা সরকারি টিকিট নয়। তাঁদের নিজেদের তৈরি করা টিকিট।

শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, ট্রেনে যাত্রীদের বসার নির্ধারিত আসন ছাড়া ছাদে, পাদানিতে, বাফারে (দুই কামরার মাঝখানের জায়গায়) বা অন্য কোথাও ভ্রমণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তারপরেও কীভাবে ট্রেনের ছাদে উঠে যাত্রীরা ঢাকায় যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আমাদের লোকজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা যেতে পারে। দেখতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’