Thank you for trying Sticky AMP!!

ট্রেন আসছে, সাবধান!

বহুবার উচ্ছেদ করা সত্ত্বেও নিয়মিত তদারকির অভাবে জুরাইন রেলগেট এলাকায় রেললাইন ঘেঁষে বসা কাঁচাবাজারটি বন্ধ হচ্ছে না। ট্রেন চলার সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসে থাকেন দোকানিরা। ছবিটি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুরাইন রেলগেট এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো

লাউটি ব্যাগে ঢোকাচ্ছিলেন ইয়াকুব। এমন সময় সবজি বিক্রেতা রফিক চিৎকার দিয়ে বললেন, ‘ভাই, সরেন সরেন, ট্রেন আসছে।’ হন্তদন্ত হয়ে দৌড় দিয়ে অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন ইয়াকুব। প্রতিদিনের এই চিত্র রাজধানীর জুরাইন রেলগেট কাঁচাবাজার এলাকার। ট্রেনের শব্দ শোনামাত্র বিক্রেতারা বলতে থাকেন, ‘সাবধান, ট্রেন আসছে।’
রেললাইনের গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ এই বাজারের পরিধি প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাজারসদাই করেন এলাকার লোকজন। বাজার করতে এসে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। অনেকে মারাও যাচ্ছেন। রিকশাচালক আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বললেন, রেলগেটের এই বাজারে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর গেন্ডারিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জের পাগলা পর্যন্ত রেললাইনের গা ঘেঁষে তিনটি কাঁচাবাজার গড়ে উঠেছে। এগুলো জুরাইন রেলগেট বাজার, শ্যামপুর ও পাগলার রেলগেট বাজার নামে পরিচিত। রেললাইনের ওপরে রাখা হয়েছে পেঁয়াজ, আলুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। ট্রেনের শব্দ শোনামাত্রই বাজারে আসা লোকজন দৌড় দিয়ে রেললাইনের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন কমলাপুর থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ৩২ বার ট্রেন যাতায়াত করে।
ঢাকা রেলওয়ে থানার সূত্র বলছে, চলতি বছরে নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন ১৩ জন। গত বছর মারা যান ১৭ জন। আর ২০১৪ সালে মারা যান ২০ জন। অধিকাংশই মারা গেছেন জুরাইন রেলগেট, শ্যামপুরের বউবাজার ও পাগলার রেলগেট বাজার এলাকায়।
জুরাইনের বাসিন্দা আবদুল হক বললেন, জুরাইন রেলগেট বাজার এলাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটলেও দেখার কেউ নেই। এই অবৈধ বাজার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উচ্ছেদ করা জরুরি।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা রেলওয়ে বিভাগের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে রেললাইনের গা ঘেঁষে বেশ কটি অবৈধ বাজার গড়ে উঠেছে। শিগগিরই এসব বাজার উচ্ছেদ করা হবে। তবে সকালে বাজার উচ্ছেদ করলে বিকেলে আবার মালামাল নিয়ে রেললাইনের ধারে বসে পড়ে তারা।
ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক বলেন, ‘উচ্ছেদের পর আর কাউকেই রেললাইনের ধারে বাজার বসাতে দেব না। বাজার বসালেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’