ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলে যানবাহন
>দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন
২০০৮ সালের মধ্যে সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ে। এরপর থেকে সড়কে কোনো ধরনের সংস্কার করা হয়নি
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা সদর থেকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদরে যাতায়াতের সড়কটি সংস্কার হয়নি আট বছর। ইতিমধ্যে পিচ উঠে গেছে। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলাচল করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে। প্রতিদিন এলাকাবাসীকে পোহাতে হয় দুর্ভোগ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) শরীয়তপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ডামুড্যা উপজেলা সদর থেকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদরের দূরত্ব আট কিলোমিটার।
সড়কটির সাড়ে চার কিলোমিটার পড়েছে ডামুড্যা উপজেলায়। আর সাড়ে তিন কিলোমিটার রয়েছে ভেদরগঞ্জ উপজেলায়। এর মধ্যে ভেদরগঞ্জের বাঐকান্দি থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং ডামুড্যা উপজেলা সদর থেকে বাঐকান্দি পর্যন্ত বাকি সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার অংশ এলজিইডি রক্ষণাবেক্ষণ করে। এই সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার অংশ ২০০০ সালে পাকা করা হয়। ২০০৮ সালের মধ্যে সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ে। ২০০৮ সালের পর থেকে সড়কে কোনো ধরনের সংস্কার করা হয়নি।
গতকাল রোববার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত রয়েছে। এসব গর্তে পানি জমে আছে। গর্তের পাশ কেটে চলাচল করছে হালকা যানবাহন।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন নারায়ণপুর গ্রামের বেলায়েত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। বেশির ভাগ অংশের পিচ উঠে গেছে কবে। লাল সুরকি বেরিয়ে গেছে। আর একটু পর পর গর্ত। সেখানে পানি জমে। পাশে কাদা হয়। এ সড়ক দিয়ে কোনো যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে না। এলাকাবাসী ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ হালকা যানে যাতায়াত করে। তা-ও যাত্রীদের দুর্ঘটনার ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত থাকায় প্রায়ই গাড়ি উল্টে যায়। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছে।
ইজিবাইকচালক আনোয়ার শেখ বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এ সড়কে গাড়ি চালাতে আমাদের অনেক অসুবিধা হয়। প্রায়ই গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়। এর চেয়ে বড় কথা, প্রায় মনে হয় এ বুঝি গাড়ি উল্টে গেল।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সড়কটির সাড়ে চার কিলোমিটার সংস্কার করার জন্য একটি প্রকল্প জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। তবে কবে প্রকল্পটি অনুমোদিত হবে, তা বলা যাচ্ছে না।
শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সড়কটির সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের অবস্থা নাজুক। আমাদের কার্যালয়ে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এত দিন সড়কটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। তবে সড়কটি মেরামত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে মধ্যে এ সড়ক মেরামত করা সম্ভব হবে।’
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’