Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতির বক্তব্য নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তি

অপরাজেয় বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নারী নির্যাতন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের দেওয়া একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন৷ ছাত্র ইউনিয়নের দাবি, সনজিত এক বক্তব্যের মাধ্যমে নারী নিপীড়নকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছেন, তাই শিক্ষার্থীরা তাঁকে আর ক্যাম্পাসে দেখতে চান না৷ আর ছাত্রলীগ বলেছে, তারা সব সময় ধর্ষণ-নারী নিপীড়নের বিপক্ষে সোচ্চার; ছাত্র ইউনিয়নই ধর্ষণকারীদের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা গড়েছে৷

সোমবার ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ ও সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম যৌথ বিবৃতি দেন৷ এর জবাবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পাল্টা বিজ্ঞপ্তিটি দেন সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম৷


ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে দেওয়া এক বক্তব্যে সনজিত চন্দ্র দাস “স্বাধীনতাবিরোধী ছাড়া অন্য কোনো নারী যদি নির্যাতনের শিকার হয়, তা প্রতিহত করব”- এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন৷ আমরা মনে করি, এই বক্তব্য ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে ক্রমাগত ঘটে চলা ধর্ষণ-নারী নির্যাতনের ঘটনাকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা, একই সঙ্গে এই বক্তব্য বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতকে দমন করার রাস্তা হিসেবে যৌন নিপীড়নকে সাংগঠনিক ছাড়পত্র দেওয়ার শামিল৷ এই বক্তব্যের পর তাদের করা যেকোনো ধর্ষণের ঘটনার ভুক্তভোগীকে “স্বাধীনতাবিরোধী” বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেন না তাদের নেতা-কর্মীরা৷ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে নির্যাতনের শিকার নারীর মধ্যে “স্বাধীনতাবিরোধী” খোঁজার মাধ্যমে সনজিত তাঁর সংগঠনের নারী নিপীড়কদের বাঁচানোর অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন৷’


বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতা আরও বলেন, যে রাজু শহীদ হয়েছিলেন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সন্ত্রাস প্রতিহত করতে গিয়ে, সেই রাজুর নামে স্থাপিত ভাস্কর্যকে তিনি কলঙ্কিত করেছেন৷ তাঁর উপস্থিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সনজিতকে আর ক্যাম্পাসে দেখতে চান না।

অন্যদিকে পাল্টা বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ বলেছে, ‘সনজিত চন্দ্র দাসের একটি বক্তব্যকে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রং মাখিয়ে বিভ্রান্তিকর যে প্রচারণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের নামে প্রচারিত হয়েছে, তা সংগঠনটির গৌরবজনক ঐতিহাসিকতার হতাশাজনক পরিণতি বলে আমরা মনে করি৷ আমরা উদ্বেগের সঙ্গে আরও মনে করি, সাম্প্রদায়িক-প্রতিক্রিয়াশীল, স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীর কাছে ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান নেতৃত্ব তাদের সংগঠনকে যেভাবে লজ্জাজনক ইজারা দিয়েছে, সাম্প্রতিক যৌথ বিবৃতি তারই প্রমাণ বহন করে৷’


ছাত্রলীগের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘ছাত্রলীগ সব সময় ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও নারীর মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার বিপক্ষে সোচ্চার। বিপরীতে ছাত্র ইউনিয়ন ধর্ষণকারীদের পক্ষে নীরবতা পালন করে, ধর্ষণকারীদের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা গড়ে, আকারে-ইঙ্গিতে ধর্ষণকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থান পরিষ্কার করেছে৷ এমনকি সংগঠনটির ভেতরে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ঘটনারও কোনো প্রতিকার আগে তারা করেনি, যার ফলে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্যাতিতাকে অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে হয়েছে৷ সুষ্ঠু-স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা, সহমর্মিতাকে পাশ কাটিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের যে হীন প্রতিহিংসা দৃশ্যমান, তা সামগ্রিক ছাত্ররাজনীতির জন্য নেতিবাচক বলে আমরা মনে করি৷’