Thank you for trying Sticky AMP!!

তথ্য যাচাই না করে আপলোড-শেয়ার নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘তথ্য যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড বা শেয়ার করা যাবে না। গুজব যেই ছড়াক, আমরা তাঁদের চিহ্নিত করেছি এবং করছি। যাঁরা এই কাজগুলো করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ‘মিথ্যে রুখে সত্য জান’ শীর্ষক গুজববিরোধী তথ্যচিত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গুজবের খারাপ দিকের কথা বলতে গিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘রামুর কথা আমরা ভুলিনি। আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কথাও ভুলিনি। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আন্দোলনের সময় গুজব রটিয়ে কত দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে, সেটিও দেখেছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অনেক দূর হেঁটেছি। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এর সুফল যেমন পাচ্ছেন, তেমনি কুফলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। তথ্য যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড বা শেয়ার করা যাবে না। গুজব একটি দেশলাইয়ের মতো। দেশলাইয়ের কাঠি যেমন বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে, তেমনি গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতি নষ্ট হতে পারে। র‌্যাব সাইবার ক্রাইম সেল গঠন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সাইবার অপরাধীদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। গুজব যেই ছড়াক, আমরা তাঁদের চিহ্নিত করেছি এবং করছি। যাঁরা এই কাজগুলো করেছেন, তাঁদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, লেখাপড়া জানে না—এমন ব্যক্তিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে। কক্সবাজারের রামুর ঘটনা টেনে তিনি বলেন, রামুতে শুধু গুজবের কারণে আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়েও গুজবে সামাজিক মাধ্যম ভরে গিয়েছিল। গুজব সমাজে শান্তি–শৃঙ্খলা নষ্ট করে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে বিশৃঙ্খল করার জন্য, বানচাল করার জন্য, একশ্রেণির মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে। ক্রমাগত মিথ্যা গুজব প্রচার করার মাধ্যমে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘গত ১০ বছরে আমাদের দেশে ইন্টারনেট–বিপ্লব ঘটে গেছে। প্রায় সাত কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। বিকারগ্রস্ত, অসুস্থ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, হতাশ একটা গ্রুপ গত তিন–চার মাসে ইন্টারনেটে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে এবং রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা, তা–ই প্রচার করে যাচ্ছে। ডিজিটাল বিপ্লবের আড়ালে তারা এই সুযোগ নিয়েছে। গুজব ছড়ানোর জন্য এ পর্যন্ত ১৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। যাঁরা গুজব ছড়াচ্ছেন, তাঁদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব। ডিজিটাল মিডিয়াকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাব।’

ছুরির দুই ধরনের কাজের উদাহরণ দিয়ে বেনজীর বলেন, একই ছুরি চিকিৎসকের কাছে গেলে জীবন রক্ষাকারী আবার ডাকাতের কাছে গেলে জীবন নাশকারী। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি ও মাদকের বিরুদ্ধে আমরা ভিডিওচিত্র তৈরি করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় গুজববিরোধী তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো একধরনের ফৌজদারি অপরাধ। তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে।