Thank you for trying Sticky AMP!!

তলবে এসে চা পেলেন না মিয়ানমারের দূত

মিয়ানমারের ধর্মমন্ত্রী থুরা উ অং কোর মিথ্যা মন্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লুইন ওকে আজ বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও ইসলাম নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে উ কোর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের মন্ত্রীর ওই মন্তব্য যে দেশটির ‘বর্ণবাদী’ নীতির প্রতিফলন সেটিও দেশটির রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের দপ্তরে বুধবার বিকেলে লুইন ওকে তলব করা হয়। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূতকে চা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। লুইন ওকের ক্ষেত্রে চা খেতে দেওয়া হয়নি।

মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে বর্ণবাদী নীতি অনুসরণ করত। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত মিয়ানমারের এখনকার সরকার জনসমর্থন ধরে রাখতে একই নীতিতে হাঁটছে।

গত ২৭ নভেম্বর মিয়ানমারের ধর্মমন্ত্রী থুরা উ অং কো এক শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ইসলামের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে মন্তব্য করেছেন ‘উগ্রবাদী ধর্ম’ বৌদ্ধ ধর্মের জন্য হুমকি।

ওই অনুষ্ঠানে থুর উ বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এক বিয়েতে অভ্যস্ত এবং তাদের এক বা দুটি সন্তান রয়েছে। উগ্রপন্থী ধর্ম তিন কিংবা চার বিয়ে আর ১৫ থেকে ২০টি সন্তান ধারণে উৎসাহ দেয়। তিন, চার, পাঁচ দশক পর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন।

গতকাল মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় থুর উ বলেন, সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। এর মাধ্যমে দেশটি অর্থ উপার্জন করছে এবং তাদের রাখাইনে ফিরতে দিচ্ছে না। রোহিঙ্গা তরুণদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে এবং তারা মিয়ানমারের দিকে আসছেন এমন অভিযোগও তিনি এনেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন মিয়ানমারের ধর্মমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে দেশটির রাষ্ট্রদূতকে বুধবার বলা হয়েছে, এ ধরনের মন্তব্য মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত হানে, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। মিয়ানমারের ধর্মমন্ত্রীর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশের পক্ষে রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিকভাবে মিয়ানমারের তুলনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তাই রাখাইনে আবাসের জন্য একজন বাংলাদেশিও যায়নি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যর্থতা বাংলাদেশের ওপর চাপানো প্রসঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের উপস্থিতির কারণে বাংলাদেশকে আর্থিক, সামাজিক ও প্রতিবেশগত মূল্য দিতে হচ্ছে। কাজেই বাংলাদেশ প্রত্যাবাসনে বাধা দিচ্ছে এটা একেবারেই মিথ্যা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের নীতিগত অবস্থানের কারণে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন রাখাইনে ফিরতে চাইছে না।