Thank you for trying Sticky AMP!!

তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে মায়ের লড়াই

(বাঁ থেকে) প্রতিবন্ধী আবিদ, হুজায়েত ও মাহফুজের একমাত্র ভরসা তাদের মা ফাতেমা বেগম l প্রথম আলো

লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের খৈয়ারকুলের গৃহবধূ ফাতেমা বেগমকে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তিন প্রতিবন্ধী সন্তানের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হয়। স্বামী শাহাদাত হোসেন বাজারে একটি ছোট দোকান দিয়েছেন। স্বামীর আয়ে সংসারের খরচ উঠে এলেও সন্তানদের ওষুধের খরচ জোগানো সম্ভব হয় না। কাজের ফাঁকে তাই সেলাই করে কিছু টাকাও উপার্জন করতেন ফাতেমা বেগম। কিন্তু এখন তাঁর সেলাই মেশিনটিও নষ্ট।
ফাতেমা বেগম বলেন, তিন সন্তান আবিদ (১৬), হুজায়েত (১৪) ও মাহফুজ (১১) জন্মের সময় সুস্থ ছিল। কিন্তু বয়স সাত-আট বছর হওয়ার পর থেকেই তাদের পা শুকিয়ে যেতে থাকে। এখন তিন ছেলের কেউই হাঁটতে পারে না।
ফাতেমা বলেন, কয়েকজন চিকিৎসক ছেলেদের এই অসুখের পেছনে বাবা-মায়ের রক্তের গ্রুপ এক হওয়াকে দায়ী করেছেন। বর্তমানে তিন ছেলেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে তাঁদের মেয়ে উম্মে আইমন (২০) সুস্থভাবেই বেড়ে উঠেছেন। বর্তমানে তিনি সরকারি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক কোর্সে পড়ছেন।
ফাতেমা ও শাহাদাত জানান, তাঁদের তিন ছেলের চিকিৎসাও হচ্ছে না ঠিকমতো। এলাকায় প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো কোনো বিশেষায়িত কেন্দ্র নেই বলে ঘরে রেখেই তাদের সেবা-যত্ন করতে হচ্ছে। তবে লোহাগাড়ার স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সন্তানদের নিয়ে যান মাঝেমধ্যে।
ফাতেমা জানান, সন্তানদের ওষুধ কিনতে এখন প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। সরকার থেকে একটি সন্তানের জন্য মাসিক ৫০০ টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা পান।
স্বামী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সংসার চালাতেই আমি হিমশিম খাচ্ছি। ছেলেদের নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামে বড় হাসপাতালে ছোটাছুটি করব এমন সংগতি আমার নেই। যদি সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে, আমার ছেলেদের কষ্ট দূর হবে।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সদস্য আরমান বাবু বলেন, ‘ফাতেমা বেগমের তিন প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসার জন্য আমরা আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি। হুইল চেয়ারও দিয়েছি। ভবিষ্যতেও সহায়তা দেওয়া হবে।’
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফিজনূর রহমান জানান, তিন প্রতিবন্ধী শিশু যাতে ভাতা পায়, সে উদ্যোগ নেওয়া হবে।