Thank you for trying Sticky AMP!!

তৃণমূলের কারণে আ.লীগের ভরাডুবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করেও সুফল পায়নি আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের কাছে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে ভোটের আয়োজন করা হয়। সেখানে তৃণমূলের ১৬২টির ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মুন্সি একাই পান ৮৭ ভোট। এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছফিউল্লাহ মিয়া ৪০, সাবেক সভাপতি ফিরোজ মিয়া ২৭ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পান ৯ ভোট।
অভিযোগ রয়েছে, তৃণমূলের সমর্থন আদায় করতে সমর্থনপ্রত্যাশীরা অর্থ লেনদেন করেন। ১৬২ জনের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া বাকিরা এক বা একাধিক সমর্থনপ্রত্যাশীর কাছ থেকে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন। ফলে তৃণমূলের নেতাদের প্রতি ক্ষোভ ও অবিশ্বাস বাড়তে শুরু করে। এ কারণে ছফিউল্লাহ দল থেকে পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া আনিছুর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থেকে যান। তিনি পান ১৬ হাজার ১৫৯ ভোট। আর আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী হেরে যান তিন হাজার ৩৯৩ ভোটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, সমর্থন না পাওয়ায় ক্ষোভে ফিরোজ কয়েকজন তৃণমূল নেতার কাছে টাকা ফেরত চেয়ে টেলিফোনও করেন। ওই সব ঘটনার সূত্র ধরেই জ্যেষ্ঠ নেতাদের বড় একটি অংশ দলীয় প্রার্থীর সঙ্গ ছেড়ে বিদ্রোহীর হয়ে কাজ করেন। কেউ কেউ বিএনপির পক্ষ নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের ওই নেতারা আরও জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি খোরশেদ মিয়া, রুস্তম আলী সিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সালাউদ্দিন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, সাবেক সহসভাপতি মো. ইলিয়াছ দলীয় প্রার্থীর হয়ে কাজ করেননি। তবে আবু নাছের আহমেদ দলীয় কিংবা বিদ্রোহীর কোনোটির পক্ষ না নিয়ে বিএনপি প্রার্থীর হয়ে কাজ করেন। এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেবজুল বারি, মোবারক আলী চৌধুরী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক শাহিন সিকদারের নির্বাচনের সময় সক্রিয় ছিলেন না।
ছফিউল্লাহ বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করেছি। তাহলে কেন দলের পক্ষে কাজ করব?’ আবু নাছের আহমেদ বলেন, ‘আমি কোনো প্রার্থী পক্ষে কাজ করিনি। বিশেষ কারণে নীরব ছিলাম।’ রুস্তম আলী সিকদার বলেন, ‘আমি দলের প্রার্থীর পক্ষে ছিলাম না।’
খোরশেদ মিয়া তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে অর্থ লেনদেনের কথা উল্লেখ করে জানান, তৃণমূল যদি টাকা দিয়ে কেনাবেচা হয়, তাহলে চূড়ান্ত বিজয় আসবে কীভাবে? ফিরোজও টাকা লেনদেনের কথা স্বীকার করেন। তবে ফেরত চেয়ে টেলিফোন করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে অবহিত করেন।
এ ছাড়া মো. সালাউদ্দিন, মতিউর রহমান, মো. ইলিয়াছ, আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, হেবজুল বারি, মোবারক আলী চৌধুরী ও শাহিন সিকদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি।