Thank you for trying Sticky AMP!!

ত্রুটির ধাক্কায় যাত্রী হারাল বিমান

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা থেকে সৈয়দপুরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেও ত্রুটির কারণে ফিরে আসা বিমানের ফ্লাইটটি আজ বুধবার নামমাত্র যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে।

যান্ত্রিক ত্রুটির বড় খেসারত দিতে হলো বিমানকে। এক দিনের মধ্যেই ওই রুটে বিমানের যাত্রীসংখ্যা তলানিতে নেমে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা থেকে সৈয়দপুরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেও ত্রুটির কারণে ফিরে আসা বিমানের ফ্লাইটটি আজ বুধবার নামমাত্র যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে। ওই রুটে আসা-যাওয়ায় ১৪৮ যাত্রী ধারণক্ষমতার বিমানে আজ যাত্রী ছিল মাত্র ৩০ জন!

আকাশপথে ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে যেতে সময় লাগে মাত্র ৫০ মিনিট। যানজটমুক্ত থাকলে সড়কপথে গুনতে হয় প্রায় আট ঘণ্টা। গতকাল দীর্ঘ ঘণ্টা দশেক অপেক্ষা করেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৬৭ জন যাত্রী সৈয়দপুর যেতে পারেননি। একইভাবে ঢাকায় ফিরতি ফ্লাইটে আসতে পারেননি ৭৪ যাত্রী।
ঢাকা ও সৈয়দপুর—দুই বিমানবন্দরেই টিকিট ফেরত দিয়ে ফিরে যান যাত্রীরা। ত্রুটি সারিয়ে দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা পর সৈয়দপুরে আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় অবতরণ করে বিমানের ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটি। কিন্তু বিমানটি ছিল প্রায় যাত্রীশূন্য অবস্থায়। ৭৪ আসনের উড়োজাহাজটিতে পাওয়া গেছে মাত্র ছয়জন যাত্রী। ফিরতি পথে অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও যাত্রী পাওয়া গেছে মাত্র ২৪ জন।

গতকাল ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১২টা ২৬ মিনিটে বিমানের সৈয়দপুরগামী ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করে। ওড়ার ১৮ মিনিট পর উড়োজাহাজটি শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফিরে আসে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্টেশন এয়ার ট্রাফিক অফিসার অহিদুল ইসলাম জানান, ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের ‘কেবিনে প্রেশার’ কমে গিয়েছিল। এ ধরনের সমস্যা হলে উড়োজাহাজ বেশি ওপর দিয়ে উড়তে পারে না। এতে যাত্রীদেরও নানা ধরনের শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এ আশঙ্কায় পাইলট বিমানটিকে ঢাকায় অবতরণ করান।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, এই ফ্লাইটে ৬৭ জন যাত্রী এবং ক্রুসহ ৭৩ জন আরোহী ছিলেন। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উড়োজাহাজটি ঢাকায় ফিরে এলেও এটাকে ‘জরুরি অবতরণ’ বলেনি বিমান কর্তৃপক্ষ।

পরে বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকায় উড়োজাহাজটির যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে ‘ট্রায়াল রান’ (পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন) করানো হয়। সৈয়দপুর বিমানবন্দর ক্লিয়ারেন্স না দেওয়াতে গতকাল রাত আটটার পরে ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়।
তবে সারা দিন অপেক্ষা করিয়ে রাতে ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ যাত্রীরা অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে এসে মারমুখী হয়ে ওঠেন। এ সময় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় সৈয়দপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায় বিমান। ফিরতি ফ্লাইটটি ঢাকায় আসে সকাল সাড়ে ১০টায়।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক শাহীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ছয়জন যাত্রী নিয়ে আসে বিমান। ফিরতি ফ্লাইটে যাত্রীসংখ্যা ছিল ২৪।
তবে, অন্যান্য বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থার ফ্লাইটগুলো যাত্রী পূর্ণ করেই ঢাকা-সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে আসা-যাওয়া করেছে।

সিভিল এভিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে নয়টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এর মধ্যে বিমানের একটি, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলার তিনটি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের দুটি করে ফ্লাইট রয়েছে।
আজ সকাল ১০টায় রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ৪৬ আসনের উড়োজাহাজ যাত্রী পূর্ণ করেই সৈয়দপুর আসে। ফিরতি ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৩৬ জন। ৬৮ আসনের নভোএয়ারের ঢাকা থেকে আসা ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৬৩ জন। তাদের ফিরতি ফ্লাইটে একটি আসনও ফাঁকা ছিল না। নভোএয়ারের পৌনে একটার ফ্লাইটে ছিল ৬৮ যাত্রী। তাদের ঢাকার ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৬৭ জন। ৭৪ আসনের ইউএস বাংলার সকালের ফ্লাইটে একটি আসনও যাত্রীশূন্য ছিল না বলে জানান সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক শাহীন আহমেদ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক হলো সৈয়দপুর। ঈদসহ বিভিন্ন মৌসুমে এসব রুটে বাড়তি ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে সংস্থাগুলো। আর গ্রীষ্মকালে এই রুটে যাত্রী অন্যান্য সময়ের চেয়ে আরও বেড়ে যায়।
তবে ড্যাশ-৮ মডেলের উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকাসহ দেশের আটটি রুট ও বিভিন্ন আঞ্চলিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান। এ দুটি উড়োজাহাজের মধ্যে একটি প্রায় সব সময়ই বিকল হয়ে পড়ে থাকে।