Thank you for trying Sticky AMP!!

দণ্ডিত নেতাদের নির্বাচন অনিশ্চিত

দুর্নীতির মামলায় দণ্ড থাকায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপির এক ডজনেরও বেশি নেতার নির্বাচনে অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার বিএনপির পাঁচ নেতার সাজা ও দণ্ড স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে করা আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ওই আদেশে বলা হয়, সংবিধান অনুসারে দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেও দণ্ডিত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

এ প্রেক্ষাপটে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দণ্ডিত এক ডজনেরও বেশি নেতা ও কারও পরিবারের সদস্যদেরও সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যদিও বিএনপির সাবেক নেতা নাজমুল হুদা দণ্ড নিয়েও নির্বাচনে অংশ নিতে আশাবাদী।

নাজমুল হুদার যুক্তি, তিনি এর মধ্যেই সরকারের কাছে সাজা স্থগিত বা মওকুফের আবেদন করেছেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ২ ডিসেম্বর দিন রয়েছে। এর আগে যদি ওই সাজা মওকুফ কিংবা স্থগিত হয়, তাহলে নির্বাচনে বাধা থাকবে না। এটি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বিতা করার বিষয়ে অযোগ্যতা আছে।

গত মঙ্গলবার দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপির পাঁচ নেতার সাজা ও দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। ওই পাঁচজন হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, ড্যাব নেতা চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ঝিনাইদহ-১ আসনে বিএনপির সাবেক সাংসদ আবদুল ওহাব ও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মশিউর রহমান।

হাইকোর্টে বিফল হয়ে ওই দিনই দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন জাহিদ হোসেন, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে গতকাল আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। এই আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ ‘নো অর্ডার’ বলে আদেশ দেন।

পরে অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচজনের মধ্যে একজন আপিল বিভাগে আবেদন নিয়ে যান। যেহেতু তাঁর বিষয়ে আদালত কোনো আদেশ দেননি, সুতরাং অন্যদের ব্যাপারেও একই আদেশ হবে বলে ধরে নেওয়া যায়। হাইকোর্ট সংবিধানের ৬৬ (২) ঘ অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে যাঁরা দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাঁদের নির্বাচন করার সুযোগ নেই বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ফলে যাঁরাই এরূপ দণ্ডে দণ্ডিত সাজাপ্রাপ্ত, তাঁদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অবকাশ নেই। যদি ইতিমধ্যে তাঁরা মুক্ত হয়ে যান অর্থাৎ খালাস হয়ে যান, তাঁদেরও নির্বাচনের জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, সাজাপ্রাপ্ত এই পাঁচ আসামি হাইকোর্টের রায় অনুসারে তাঁরা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কারণ সংবিধান অনুসারে দুই বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নির্বাচনে অযোগ্য হন।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারও দুটি দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। একটি মামলায় খালেদার আইনজীবীরা আপিল করেছেন। আরেকটি মামলার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, সাবেক মন্ত্রী রফিকুল ইসলাম মিয়া, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর নাছিরউদ্দিন ও তাঁর ছেলে মীর হেলালউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান ওমর ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিচারিক আদালতে দণ্ড পান। তাঁদের আপিল এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। আর নাজমুল হুদার সাজা বহাল রেখেছেন আদালত।

 এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান স্বতন্ত্র সাংসদ হাজি মোহাম্মদ সেলিমের আপিলও হাইকোর্টে বিচারাধীন।