Thank you for trying Sticky AMP!!

দুই মাসে ৬৩৬টি নমুনা সংগ্রহ

দেবাশীষ বড়ুয়া

কখনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, আবার কখনো মানুষের বাড়িতে ছুটে চলেছেন তিনি। দুই মাস আগে ছেলেকে খেলনা আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজে বেরিয়ে পড়েন। এই সময়ে সংগ্রহ করেছেন ৬৩৬টি নমুনা।

এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হন বাবা ও তিন বছর বয়সী ছেলে। এসব কোনো কিছুই তাঁকে দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি।

দেবাশীষ বড়ুয়া চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। পটিয়া ছাড়াও পাশ্ববর্তী কর্ণফুলী উপজেলার রোগীদেরও নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। দায়িত্বপালনের দেড় মাসে তিনি বাসায় যাননি, থেকেছেন হাসপাতালের পাশে কোয়ার্টারে। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনোলজিস্ট রবিউল হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পটিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৭ জন।

দেবাশীষের বাড়ি পটিয়ার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের নাইখাইন গ্রামে। ২০০৪ সালে তিনি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে টেকনাফ উপজেলায় যোগ দেন। এরপর বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করে অবশেষে ২০১৩ সাসে আসেন পটিয়ায়।

এক দিনের ভিডিও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে নেমে পড়েন দেবাশীষ। ল্যাবে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁর ছিলই। এ ছাড়া ইন্টারনেট থেকে নমুনা সংগ্রহের তথ্য জেনে নেন। গত ২ এপ্রিল দুজনের নমুনা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় কাজ।

শুরুর দিক থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাবেদ, আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাজিব দে–সহ চিকিৎসকেরা তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন। নমুনা সংগ্রহ শুরু করার পর থেকে মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্র থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন দেবাশীষ।

শুরু থেকে হাসপাতালে অনেক সহকর্মী দেবাশীষকে দেখলে দূরে চলে যেতেন। কেউ দরজা বন্ধ করে দিতেন। কখনও টাকা দিয়ে মানুষ ঠিক করে সাপ্তাহিক বাজার করতে হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাবেদ প্রথম আলোকে বলেন, রোগীর চাপে কখনো দেবাশীষ বিরক্ত বোধ করেননি। কাজে কোনো অবহেলা নেই তাঁর।