Thank you for trying Sticky AMP!!

দুদকের চার মামলায় জামিন পেলেন ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান কাদের

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।

এই তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, দুদকের পৃথক চারটি মামলায় গ্রেপ্তার ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। দুদকের পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত এম এ কাদেরের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত বছরের ৩০ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের। রপ্তানি না করেও ভুয়া রপ্তানি বিলের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে ক্রিসেন্ট গ্রুপের এম এ কাদেরসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি মামলা করে দুদক।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা, জাল কাগজপত্র তৈরি করে জালিয়াতি, পরস্পর যোগসাজশ, প্রতারণায় সহায়তা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের, পরিচালক সুলতানা বেগম ও রেজিয়া বেগম, রূপালী কম্পোজিট লেদারের পরিচালক সামিয়া কাদের নদী, রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিটুন জাহান মীরা ও লেসকো লিমিটেডের পরিচালক হারুন–অর–রশীদ। ব্যাংকারদের মধ্যে আসামি করা হয় ১৫ জনকে। তাঁরা হলেন জনতা ব্যাংকের তৎকালীন দুই জি এম মো. ফখরুল আলম (বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের ডিএমডি) ও মো. জাকির হোসেন (বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি), জনতা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম (বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি), ডিজিএম মুহাম্মদ ইকবাল, এ কে এম আসাদুজ্জামান ও কাজী রইস উদ্দিন আহমেদ, এজিএম মো. আতাউর রহমান সরকার ও এস এম শরীফুল ইসলাম, এসপিও মো. খায়রুল আমিন ও বাহারুল আলম, মো. মাগরেব আলী, অফিসার ইনচার্জ (এক্সপোর্ট) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, সিনিয়র অফিসার ইনচার্জ মো. সাইদুজ্জামান, মো. মনিরুজ্জামান ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।

মামলার এজাহারে ক্রিসেন্ট লেদারের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ক্রিসেন্ট ট্যানারির বিরুদ্ধে ৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৯৫ হাজার ১২০ টাকা, লেসকো লিমিটেডের ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৯ টাকা, রূপালী কম্পোজিট লেদারের ৪৫৪ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮৪ টাকা এবং রিমেক্স ফুটওয়্যারের বিরুদ্ধে ৬৪৮ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৭৪৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

মামলার ব্যাপারে দুদক জানায়, জনতা ব্যাংকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ ডাকাতি। রপ্তানি বিল কেনার ক্ষেত্রে প্রথম লেনদেনের আগে প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। এ ছাড়া বিক্রয় চুক্তির সঠিকতা নিশ্চিত হওয়া, তিন মাস অন্তর ক্রেতার ক্রেডিট রিপোর্ট সংগ্রহসহ কয়েকটি শর্ত পালন করতে হয়। কিন্তু জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখায় এসব নির্দেশনা পালন করা হয়নি। গ্রাহকদের অবৈধ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার তৎকালীন কর্মরত কর্মকতারা অসৎ উদ্দেশ্যে জালজালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা নিজেরা লাভবান হয়ে এবং গ্রাহকদের লাভবান করার জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রাহকেরা অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া রপ্তানি চুক্তি ব্যাংকে দাখিল করে মালামাল রপ্তানি না করেও তার বিপরীতে জনতা ব্যাংক থেকে ওই পরিমাণ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

এর আগে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি এই ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মামলার পরপরই ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে গ্রেপ্তার করে সংস্থাটি। তিনটি মামলায় ৯১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়। আসামি করা হয় ১৭ জনকে।