Thank you for trying Sticky AMP!!

দুঃসহ গরমে বিদ্যুতের যাওয়া-আসা

ফাইল ছবি

যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ শেখদীর বাসিন্দা খোকন হাসানের শুক্রবার সকাল নয়টার মধ্যে তাঁর ব্যবসাস্থল ওয়াইজ ঘাট ফলের আড়তে যাওয়ার কথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় এবং দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র গরমে সারা রাত তিনি ঘুমাতে পারেননি। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

খোকন হাসান এই প্রতিবেদককে বলেন, একে তো অসহ্য গরম, তার ওপর এভাবে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানকেও প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

যাত্রাবাড়ীতে বৃহস্পতিবার রাতে দুবার বিদ্যুৎ যায়। শেষবার যায় ভোর চারটার দিকে। আসে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে। শুধু যাত্রাবাড়ী নয়, গত দুদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার ঘটনা ঘটছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার ঢাকায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। শুক্রবারও ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় গরম অনুভূত হয়েছে বেশি। দুঃসহ গরমে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় জনজীবনে প্রচণ্ড দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গিয়ে আসে এক ঘণ্টার বেশি সময় পর। এলাকার চারতলা গলির বাসিন্দা নীলু মমতাজ বলেন, দুর্বিষহ গরমে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর হাতপাখাই ছিল ভরসা।

বাড্ডা নতুন বাজারের বেরাইদে বৃহস্পতিবার রাতে বিদ্যুৎ যায় তিনবার। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বহু মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। শুক্রবার সকালেও একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যায়।

এ ছাড়া গত দুদিন মতিঝিল, ফকিরাপুল, আরামবাগ, জসীমউদ্‌দীন রোড, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাফরুল—এসব এলাকায় বিদ্যুজ্জনিত দুর্ভোগ ছিল।

ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি) সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোররাত চারটার দিকে শনির আখড়ার কাছে গোবিন্দপুর এলাকায় বিদ্যুতের পাঁচটি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায়। এতে শেখদী, কাজলা, দনিয়া, যাত্রাবাড়ীর কিছু অংশ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। তিনটি ট্রান্সফরমার ঠিক করার পর সকাল ১০টার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এরপর গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে দুই দফায় বিদ্যুৎ চলে যায়।

এ ছাড়া হাসনাবাদ ১৩২ কেভি (কিলোভাইট) সঞ্চালন লাইন মেরামতের কারণেও নগরীর কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয়। নগরীর পরীবাগ এলাকায় একটি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরীবাগে এক ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ ছিল না। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), ডিপিডিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরকারি বাসভবন রয়েছে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকায় বর্তমানে কোনো লোডশেডিং নেই। তা ছাড়া গত বৃহস্পতিবার ডিপিডিসি এ এযাবৎকালের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছে। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন স্থানে ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ায় বিদ্যুৎ যাওয়ায় বিপত্তি ঘটে। তবে যত দ্রুত সম্ভব মেরামতও করা হয়।