Thank you for trying Sticky AMP!!

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বন্ধু ভিপ্স

রয়টার্স ফাইল ছবি।


বাংলাদেশ ভিজুয়ালি ইম্পেয়ার্ড পিপলস সোসাইটি একটি সংগঠনের নাম। এই সংগঠনের একটি বিশেষত্ব আছে। সেটা হলো, এটি জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষদের সংগঠন।

ডিজেবল পিপল অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৫ সালে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরাই এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা কাজ করেন, নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য। 

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে ডিজেবল পিপল অর্গানাইজেশন কাজ করে। এই সংগঠনের সদস্য হতে হলে, মানুষকে অবশ্যই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হয়।

যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সংগঠনের সদস্য হতে পারেন। সংগঠন কাজ করে সব ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য।

ভিপ্সের সদস্যসংখ্যা এখন ১৭৫। তাঁরা দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। ভিপ্সের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম জানান, সদস্যরা সবাই অবৈতনিক। স্বেচ্ছাশ্রম করেন।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করার পাশাপাশি জনগণকে তাঁদের প্রতি সচেতন করতে কাজ করে ভিপ্স। বিভিন্ন দিবস, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস, বিশ্ব সাদা ছড়ি দিবস, নারী দিবস উদযাপন করে এই সংগঠন। বছরে সবাই মিলে পিকনিক বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে ভিপ্স। এতে সবার মধ্যে সদ্ভাব বজায় থাকে।

ভিপ্সের সদস্যরা প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেন। এর মধ্য রয়েছে, কমপিউটার, এন্ড্রয়েড মোবাইল, ব্রেইল ও মোবিলিটি প্রশিক্ষণ। বিভিন্ন সময়ে খেলাধুলারও আয়োজন করা হয়।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের মানসিক বিকাশেও সহায়তা করে ভিপ্স। সেখানে গিয়ে কেউ গান করে, কেউ খেলাধুলা করে, কেউ আড্ডা দেয়।

হঠাৎ করে যারা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন তাঁদেরও সহায়তা করে ভিপ্স। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় ভিপ্স তা জানায়। তাঁদের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়।

ভিপ্সের প্রতিষ্ঠাতা মোশারফ হোসেন মজুমদার, সোহরাব হোসেন, সালোয়ার হোসেন খান, বাবুল আলম, আফসানাতুল খান। তাঁরা জানালেন, সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পড়াশোনায় সহায়তা করতে ব্রেইল পদ্ধতির বই তৈরিতে সহায়তা করে ভিপ্স। এসব কাজে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্ত করাটাও সংগঠনের একটি কাজ।

ভিপ্সের সদস্যরা সবাই শিক্ষিত। দেশের বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক, স্কুল, কলেজ, সচিবালয়ে নানা দায়িত্বপালন করছেন তাঁরা। ভিপ্সের কমপিউটার প্রশিক্ষক আরিফও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। স্থানীয় বিভিন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে সংগঠনটির কাজ চলে। বৈদেশিক তেমন কোনো সহযোগিতা ভিপ্স পায়নি।

প্রতি বছর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ব্যবহার উপযোগী ক্যালেন্ডার ছাপায় ভিপ্স।

ভিপ্সের প্রতিষ্ঠাতারা জানান, নিজস্ব ভবন না থাকাটা তাঁদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা। ভবন না থাকায় প্রতি মাসে বেশ কিছু টাকা তাঁদের বাড়িভাড়া দিতে হয়। নিজস্ব ভবন থাকলে সেই টাকা তাঁরা প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যয় করতে পারতেন।

(লেখক: দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাংবাদিক )