Thank you for trying Sticky AMP!!

দৃষ্টিহীনতা জয় করে শাকিলের জিপিএ-৫

মোহাম্মদ শাকিল

২০১০ সাল। নিজের হাতে লিখেই সে বছর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দেন মোহাম্মদ শাকিল খান। এরপরেই পরিচয় দৃষ্টিহীন শব্দের সঙ্গে। একটু একটু করে নিভে যেতে থাকে তাঁর চোখের আলো। কিন্তু সেটি তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। শুরু হয় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার লড়াই। অবশেষে ৯ বছরের সংগ্রামের কাঙ্ক্ষিত ফল এল গতকাল বুধবার। এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।

এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৪৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন শাকিল খান। শাকিল বলেন, ‘চেষ্টা করেছিলাম ভালো কিছু করার। আমার আব্বু–আম্মুরও প্রচেষ্টা ছিল। তার ফল পেলাম।’

ছেলে শাকিলের সংগ্রামে জড়িয়ে আছেন মা ফারজানা বেগমের নামও। ছেলের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ার তাগিদে ২০১১ সালে গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া থেকে চট্টগ্রাম নগরে চলে আসেন তিনি। এরপর ছেলেকে ভর্তি করান মুরাদপুরের সরকারি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে। এর মধ্যে শাকিলের ছোট বোন রওনক জাহানেরও চোখের সমস্যা শুরু হয়। দুই দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয় ও কলেজে আনা–নেওয়া করেছেন মা। প্রচেষ্টার কমতি ছিল না শাকিলের বাবা মো. আইয়ুব খানেরও। তিনি লোহাগাড়ায় ব্যবসা করেন। কয়েক দিন পরপর এসে দেখে যান ছেলেমেয়েদের। খোঁজখবর রাখেন তাঁদের পড়াশোনারও।

স্বাভাবিকভাবে ছেলের ফলে খুশি মা ফারজানা বেগমও। তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিদিন ছেলেকে কলেজে নিয়ে যেতাম। স্বপ্ন ছিল ছেলে ভালো কিছু করবে। আর সেও অনেক পরিশ্রম করেছে। আল্লাহ আমার ছেলের পরিশ্রমের ফল দিয়েছেন। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর হয় না।’

এইচএসসিতে ভালো ফলের পর আরও দূর লক্ষ্যে চোখ ফেলছেন শাকিল। ভর্তি হতে চান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়তে চান আইন অথবা রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগে।

ভবিষ্যতে কী হতে চান—এমন প্রশ্নে শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোটকাল থেকেই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন আমার।’