Thank you for trying Sticky AMP!!

দেশে করোনায় ৬ ধরনের আতঙ্ক ও অপবাদ ঝুঁকি

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ে ছয় ধরনের আতঙ্ক ও অপবাদ দেওয়ার সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। এই রোগে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন এবং যাঁরা চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি অপবাদের শিকার হচ্ছেন। আর আতঙ্ক প্রায় সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই আছে।

যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাদুজ্জামান এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক সুমন রহমানের যৌথ গবেষণা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গুণগত পদ্ধতিতে করা ওই গবেষণার ফলাফল গতকাল শনিবার অনলাইনে কনফারেন্সে তুলে ধরা হয়।

গবেষণায় বলা হয়, করোনা প্রতিরোধে ঝুঁকি তৈরি করা এই আতঙ্ক আর অপবাদ মোকাবিলা না করে শুধু চিকিৎসা আর অর্থনৈতিক প্রণোদনা দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই দুরূহ হবে।

গবেষণায় ভয় এবং অপবাদের গতিবিধি খুঁজতে গিয়ে ছয়টি ধাপে এর বিকাশ দেখা গেছে। প্রথম ধাপে বাংলাদেশে এই রোগ ছড়াবে না, এমন একটি ভ্রান্ত নিরাপত্তাবোধ তৈরি হয়। মানুষের মধ্যে অনুমান ছড়িয়ে পড়ে যে এটি অন্য দেশের রোগ, তাদের পাপাচার ও খাদ্যাভ্যাসের ফল, বাংলাদেশে এটা ছড়াবে না। আবার বলা হয়, এই গরম আবহাওয়ায় করোনা জীবাণু টিকতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, বিদেশফেরতদের নিয়ে একটা আতঙ্ক তৈরি হতে দেখা যায়। তৃতীয়ত, প্রত্যেককে সম্ভাব্য করোনাবাহক হিসেবে সন্দেহ করার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরই মধ্যে কয়েকটি বড় জমায়েত ঘটে যায়, তাতে বোঝা যায় তৃণমূল পর্যায়ে করোনা বিষয়ে মানুষের মাথাব্যথাই নেই। সেটা সচেতন মানুষের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে যায়। চতুর্থত, করোনা বিস্তারের পর সাধারণ মানুষ একে অপরকে অপবাদ দেওয়া শুরু করে। বিভিন্ন এলাকায় অনেক দোকানে প্রবাসীদের কাছে পণ্য বিক্রি হবে না বলেও প্ল্যাকার্ড লাগানো হয়। করোনায় আক্রান্তের বাড়িতে যাওয়া এবং কেউ মারা গেলে তাঁকে কবর দেওয়া নিয়েও বাধা আসতে থাকে। পঞ্চমত, লকডাউন করা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি, ভয় আবার নির্ভয়ের একটি ধরন দেখা যায়। যেমন সবকিছু বন্ধ হওয়ায় অনেকের মধ্যে জীবিকা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। চিকিৎসা নিয়ে অবিশ্বাস ও ভয় কাজ শুরু করে। ষষ্ঠত, অপবাদের একটা ভয়ংকর সংস্কৃতি তৈরি হয়। করোনা রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা এখন এই অপবাদের শিকার হচ্ছেন। কারও কারও বাড়িঘরে হামলা এবং তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

গবেষণায় বলা হয়, এই মুহূর্তে আতঙ্ক ও অপবাদের সংস্কৃতিকে প্রতিরোধ করা দরকার। প্রশাসনিক সহায়তায় একটা অপবাদ প্রতিরোধী দল তৈরি করতে হবে, যেখানে থাকবেন রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী, ধর্মীয় নেতা এবং জনপ্রশাসক। গণমাধ্যমে উপযুক্ত তথ্য দিয়ে সচেতন করতে হবে মানুষকে। সতর্কভাবে এই বার্তাগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি গুজবের ব্যাপারেও ‘জিরো টলারেন্স’ থাকতে হবে।