Thank you for trying Sticky AMP!!

দৌলতদিয়ায় দুটি ফেরিঘাট বন্ধ ১০ মাস

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ১ ও ২ নম্বর ফেরিঘাট ১০ মাসেও চালু হয়নি। এতে মাঝেমধ্যে চাপ বাড়লে অন্য চারটি ঘাট দিয়ে গাড়ি পারাপারে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। গত বছর অক্টোবরে নদীভাঙনের কারণে বিলীন হয় ঘাট দুটি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) বলছে, ঘাট প্রস্তুত না হওয়ায় ফেরি ভিড়তে পারছে না। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দাবি, ঘাট দুটি প্রস্তুত রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি চাইলে ঘাট দুটি ব্যবহার করতে পারে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ১ নম্বর ঘাটের রাস্তায় বালুমিশ্রিত বড় বড় ইটের টুকরা ফেলে রাখা হয়েছে। রাস্তার শেষ ভাগে নদীর তীরে দায়সারাভাবে পন্টুনটি বসানো হয়েছে। রাস্তা ও ঘাটের চারপাশের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। একটু দূরে ২ নম্বর ঘাটের রাস্তায় একইভাবে বালুমিশ্রিত ইটের বড় বড় টুকরা ফেলে রাখা হয়েছে। তবে ঘাটজুড়ে একাধিক সিমেন্ট ও পণ্যবাহী কার্গো ভিড়ে আছে। শতাধিক শ্রমিক কার্গো থেকে সিমেন্টসহ অন্যান্য পণ্য নামিয়ে ঘাটের সংযোগ সড়কে অপেক্ষমাণ কাভার্ড ভ্যানে তুলছেন। দুটি ঘাটই গত বছরের অক্টোবর মাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়। ঘাটের পাশেই বিআইডব্লিউটিসির একটি পন্টুন সরিয়ে উঁচু করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

ঘাটসংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, দৌলতদিয়ায় ছয়টি ফেরিঘাটের মধ্যে চারটি চালু রয়েছে। গত বছর বর্ষায় ভাঙন দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ সব কটি ঘাট সচল রাখতে প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ বছর ভাঙন প্রতিরোধে আগেভাগেই বিআইডব্লিউটিএ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে। গত বছর অক্টোবর মাসে তীব্র স্রোতে ১ ও ২ নম্বর ঘাট বিলীন হয়। এখনো ঘাট দুটি চালু করতে জোরালো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিআইডব্লিউটিএ ১ নম্বর ঘাটটি চালু করতে প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষ করেছে। ২ নম্বর ঘাটটি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন প্রভাবশালী কিছু লোক মোংলা, চট্টগ্রাম থেকে আসা সিমেন্টসহ অন্যান্য মালবাহী কার্গো থেকে পণ্য নামাচ্ছেন-উঠাচ্ছেন। বিনিময়ে অবৈধভাবে কার্গো থেকে তাঁরা বাড়তি সুবিধা আদায় করছেন। অথচ ঘাটের পাশে বিআইডব্লিউটিসির পন্টুন রাখা আছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘাট দুটি এখনো চালু হয়নি।

প্রায় এক বছর ধরে দুটি ঘাট বন্ধ থাকায় বাকি চারটি ঘাট দিয়ে ফেরিতে গাড়ি ওঠানামা করছে। মাঝেমধ্যে চাপ বাড়লে চারটি ঘাট দিয়ে গাড়ি পারাপারে হিমশিম খেতে হয়। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১৫টি ফেরি রয়েছে। দীর্ঘদিন রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান যান্ত্রিক ত্রুটিতে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতীতে পড়ে আছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, সব কটি ফেরি চললে সব ঘাট চালু থাকা দরকার। ভাঙনে গত বছর ১ ও ২ নম্বর ঘাট বিলীন হওয়ায় চারটি ঘাট দিয়ে গাড়ি পারাপার করা হয়। মাঝেমধ্যে গাড়ির চাপ বাড়লে চারটি ঘাট দিয়ে পারাপারে হিমশিম খেতে হয়। এবারও বর্ষায় ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোনো কারণে একটি ঘাট বন্ধ হলে বিপদে পড়তে হবে। দুই দিন আগে বন্ধ থাকা ১ ও ২ নম্বর ঘাট চালুর দাবি করলেও মূলত এখনো তা প্রস্তুত হয়নি।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম দাবি করেন, ‘প্রায় এক বছর বন্ধের পর গত বৃহস্পতিবার ১ নম্বর ঘাট প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন ঘাটে যেকোনো সময় ফেরি ভিড়তে পারে। ২ নম্বর ঘাটটিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিসি কেন পন্টুন বসায়নি বা ফেরি ভিড়ছে না, বিষয়টি জানা নেই। আমরা দুটি ঘাটই প্রস্তুত করেছি। ভাঙন প্রতিরোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা অব্যাহত রয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমি ৩০ জুন যোগদান করেছি। ভাঙনের কারণে বন্ধ থাকা ঘাট দুটি প্রস্তুত করার বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ আমাদের অবগত করেনি। জানলে হয়তো ২ নম্বর ঘাটে পন্টুন স্থাপনের ব্যবস্থা হতো। অনেক সময় অতিরিক্ত ১০-১২ মিনিট সময় বেশি লাগায় নিচের ঘাট ফেলে ওপরের ঘাটে যেতে চান না ফেরির মাস্টাররা। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’