Thank you for trying Sticky AMP!!

ধানচাল ক্রয়ে ফায়দা লুটতে দেওয়া হবে না: খাদ্যমন্ত্রী

জমির ধান পরিপুষ্ট হয়েছে কি না, তা যাচাই করে দেখেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। রসুলপুর, নিয়ামতপুর উপজেলা, নওগাঁ, ৯ নভেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ধান উৎপাদন করে কৃষকেরা যাতে লাভবান হতে পারে এ জন্য সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয়ে কোনো প্রকার অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। কৃষকদের প্রতারিত করে মধ্যস্বত্বভোগী কিংবা দলীয় নেতাদের ফায়দা লুটতে দেওয়া হবে না।

আজ শনিবার দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা নিয়ামতপুরে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ধানের ফলন দেখতে ওই এলাকার একটি ধানের খেত পরিদর্শন করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি ধান খেতের আইল ধরে কিছুক্ষণ হাঁটেন। ধানের ফলন দেখে পুলকিত তিনি। এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটওয়ারীসহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী মাঠে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন। চলতি আমন ফসল ছাড়াও অন্যান্য চাষাবাদ ও গ্রামীণ অর্থনীতির খোঁজ খবর নেন তিনি।

মাঠের ফসল দেখে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই পুরোদমে শুরু হবে আমন ধানের কাটা মাড়াই। এর মধ্যে যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে না হয়, তাহলে এবার বাম্পার ফলন ঘরে উঠবে। বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৫ মন পর্যন্ত ফলন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি কৃষকের ঘরের সন্তান। নিজেও এক সময় কৃষিকাজ করেছি। কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা আমি বুঝি। কৃষকদের লাভবান করতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে প্রথমবারের মতো এবার সরকারিভাবে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৬ টাকা কেজি দরে ২০ নভেম্বর থেকে সারা দেশে সরাসরি প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হবে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি বিভাগ থেকে চাষি তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে।

সারা দেশে এবার আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় দেড় কোটি মেট্রিক টন ধরা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাম্পার ফলন হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিক খেয়াল রেখেই সরকারি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধানের পাশাপাশি সরকারিভাবে সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৫০ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্ত। দেশের চাহিদা ও আপত্কালীন মজুত রেখে চাল রপ্তানির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমন ওঠার পর রপ্তানির নতুন লক্ষ্য ঠিক করা হবে।

ধান-চাল সংগ্রহে কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাশত করা হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই ধান-চাল ক্রয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। সরকারি গুদামে ধান-চাল সরবরাহে কোনোভাবেই ভাবেই মধ্যস্বত্বভোগী, দালাল চক্র কিংবা দলীয় নেতা স্থান পাবে না এমন প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সরাসরি খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

খাদ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন স্থানীয় চাষিরা। কৃষকেরা বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। সরকারিভাবে বেধে দেওয়া দরে তারা খুশি। তবে এই দর খোলা বাজরেও নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরেন। এ জন্য নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন চাষিরা।

গেল বোরো মৌসুমে বাজার দর কম পেয়ে অনেক চাষিকেই লোকসান গুনতে হয়েছে। সেই ক্ষতি এবার পুষিয়ে নিতে চান তাঁরা।