নতুন ঠিকানায় চামড়াশিল্প
হাজারীবাগে ট্যানারি শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫১ সালে। সর্বশেষ সেখানে থাকা প্রায় ২০৫টি ট্যানারির একটিতেও ছিল না বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা। ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত তরল বর্জ্য সরাসরি যেত বুড়িগঙ্গায়। কঠিন বর্জ্য ফেলা হতো বেড়িবাঁধের পাশে, খালে, জলাধারে ও রাস্তার পাশে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বুড়িগঙ্গা। আর হাজারীবাগ এলাকা হয়ে উঠেছিল আস্তাকুঁড়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংস্থা পিওর আর্থ ২০১৩ সালে বিশ্বের ১০টি এলাকাকে সর্বোচ্চ দূষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে। যার মধ্যে ছিল হাজারীবাগের নামও।
এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ ও বুড়িগঙ্গা দূষণকারী ট্যানারিগুলো সরানোর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সাধারণ মানুষ ও পরিবেশবাদীদের এই দাবি শেষ পর্যন্ত পূরণ হয়েছে ২০১৭ সালে। ৬৬ বছর পর হাজারীবাগ থেকে সরে নতুন ঠিকানায় গেছে ট্যানারিগুলো।
১৯৫১ সালে তৎকালীন সরকার জমি অধিগ্রহণ করে নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্যানারি হাজারীবাগে নিয়ে আসে। ট্যানারির বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে ১৯৮৬ সালে। সে বছর ১৭৬টি ট্যানারিসহ ৯০৩টি কারখানাকে পরিবেশদূষণ রোধে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয় সরকার। এরপর ২০০১ সালে হাইকোর্ট পরিবেশদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ২০০৩ সালে নেওয়া হয় চামড়া শিল্পনগর প্রকল্প। ওই প্রকল্পের অধীনে সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরা গ্রামে প্রায় ১৯৯ একর জমিতে গড়ে তোলা হয় চামড়া শিল্পনগর।
২০০৩ সালের পর ট্যানারি সরাতে বহু দফা সময় বেঁধে দিয়েছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ গত ৬ মার্চ হাজারীবাগের সব ট্যানারির সেবা সংযোগ বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মালিকদের আপিল সুপ্রিম কোর্টেও খারিজ হয়ে যায়। ৮ এপ্রিল হাজারীবাগে থাকা ট্যানারির সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।
চামড়া শিল্পনগর কার্যালয়ের সর্বশেষ হিসাবে সাভারে উৎপাদন শুরু করেছে ১০২টি ট্যানারি। হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানোর অন্যতম কারণ ছিল বুড়িগঙ্গার দূষণ। অথচ এখন সাভারের ট্যানারির বর্জ্যে দূষণের শিকার হচ্ছে ধলেশ্বরী নদী।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সাভারে বেশ কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাভারে সিইটিপি ঠিকমতো চালানো হয় কি না, তা কঠোরভাবে নজরে রাখা দরকার। কঠিন বর্জ্য ফেলার একটা জায়গা ঠিক করা দরকার। দ্রুত রাস্তাঘাট সংস্কার করা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি জমি বরাদ্দের বিষয়টি সুরাহা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ক্রেতারা ভাঙাচোরা রাস্তা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশ দেখে বলতে শুরু করেছেন, এটা কীভাবে পরিকল্পিত শিল্পনগর হয়।
আরও পড়ুন
-
নতুন শিক্ষাক্রম ‘ভালো’, তবে বাস্তবায়নের প্রস্তুতিতে ঘাটতি
-
ঢাকাসহ ৫ জেলা: মাধ্যমিক কাল বন্ধ হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলাই থাকছে
-
ঢাকাসহ ৫ জেলার মাধ্যমিক স্কুল–কলেজ কাল বন্ধ ঘোষণা
-
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের নিয়ে দপ্তরে উপাচার্য, শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি
-
সাবেক স্ত্রীর করা ৩ মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান