Thank you for trying Sticky AMP!!

নাগরিলিপির ঐতিহ্য রক্ষায় 'নাগরি চত্বর'

নকশায় নাগরি চত্বর

বাংলা বর্ণমালার বিকল্প লিপি হিসেবে প্রায় ৭০০ বছর আগে এ লিপির প্রচলন শুরু হয়েছিল বলে গবেষকদের ধারণা। লিপি উদ্ভবের পর থেকে লোকজীবনঘেঁষা পীর, ফকির ও মরমি গায়কেরাই নাগরিলিপিতে বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি প্রণয়নের পাশাপাশি সেগুলো যত্নসহ লালন করে আসছিলেন। ইদানীং এ লিপির ব্যবহার তেমন নেই বললেই চলে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, অধুনালুপ্ত ‘সিলেটি নাগরিলিপি’কে তরুণ প্রজন্মের কাছে পরিচিত করা এবং পর্যটকদের কাছে নাগরিলিপির ঐতিহ্য তুলে ধরার উদ্দেশ্যে নগরের সুরমা পয়েন্টে ‘নাগরি চত্বর’ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে নির্মিতব্য এ চত্বরের একটি সম্ভাব্য নকশাও তৈরি করেছেন সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রাজন দাশ। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা।
সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, এখন নকশাটির শেষ মুহূর্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। চত্বর নির্মাণে সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পরপরই কাজ শুরু করা হবে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার সকালে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মিজানুর রহমানসহ ট্রাফিক পুলিশ, সওজ কর্তৃপক্ষ এবং সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা চত্বরস্থল পরিদর্শন করেন। চত্বরের নকশাকার রাজন দাশ জানান, এটি হবে ১৪ ফুট ডায়ামিটারের গোলাকৃতি চত্বর। কেন্দ্রে আট ফুট ব্যাসার্ধের সাড়ে তিন ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট টল (ফ্লোর) থাকবে। এই ফ্লোরের ওপর প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট বর্গাকৃতির স্তম্ভ নির্মিত হবে। এ স্তম্ভের চারপাশে নাগরিলিপির আড়াই ইঞ্চি পুরুত্বের কংক্রিটের পর্দা খচিত থাকবে। রাতে কংক্রিটের পর্দার ভেতরে আলো জ্বলবে। চত্বরের চারদিকে সবুজ ঘাস রোপণ করা হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেটের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে পর্যটকদের কাছে পরিচয় ঘটাতেই এ চত্বর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সিলেটের তরুণ প্রজন্মকে নিজেদের ঐতিহ্য-সচেতন করতেই আমরা চত্বরটি নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছি।’ তিনি জানান, চত্বরের নির্মাণকাজ আগামী সপ্তাহে শুরু হয়ে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে।
কাল নাগরিবিষয়ক মতবিনিময়: কাল সোমবার বিকেল চারটায় সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে ঢাকার উৎস প্রকাশনের উদ্যোগে ‘ভাবনা বিনিময়: নাগরিলিপির একাল-সেকাল’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। উৎস প্রকাশনের মুদ্রিত বিলুপ্তপ্রায় ২৫টি নাগরিপুঁথির বই মেয়রের হাতে তুলে দেবেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফা সেলিম।