Thank you for trying Sticky AMP!!

নাটোরের ১৭ হাজার আখচাষি দিশেহারা

টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে নাটোর চিনিকলের ১৭ হাজার আখচাষি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দফায় দফায় চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষিরা আখ বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে একদিকে টাকার অভাবে সংসার চলছে না, অন্যদিকে পরবর্তী ফসলও চাষ করতে পারছেন না।
নাটোর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে এ চিনিকল এলাকায় প্রায় ১৭ হাজার আখচাষি তাঁদের ২২ হাজার একর জমিতে আখ চাষ করেছেন। গত ২২ নভেম্বর থেকে চিনিকলে আখ বিক্রি শুরু হয়। মাত্র তিন দিনের মাথায় ২৬ নভেম্বর ১৮ দলের ডাকা অবরোধের কারণে কর্তৃপক্ষ চিনিকল বন্ধ করে দেয়। ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর ১৬ ডিসেম্বর রাতে চিনিকলটি আবার চালু করা হয়। তবে ওই এক দিন অবরোধের ফাঁকে চাষিরা জমি থেকে আখ নিয়ে আসতে পারেননি। আর বর্তমানে অবরোধ চলায় সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাও সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় আখ সরবরাহ না হলে যেকোনো সময় চিনিকলটি আবারও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, প্রতিদিন এক হাজার ২৬০ জন কৃষকের কাছ থেকে চিনিকল ১৫ হাজার মেট্রিক টন আখ কিনে থাকে। এ হিসাবে ১৯ দিন বন্ধ থাকায় মোট দুই লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন আখ কেনা সম্ভব হয়নি। ফলে চিনিকল থেকে সাড়ে ১২ হাজার চাষিকে দেওয়া ঋণের টাকাও উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব কারণে চিনিকল বিভিন্ন ব্যাংক থেকে যে ঋণ নিয়েছে, তা পরিশোধ করা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
মমিনপুর গ্রামের চাষি আবদুল লতিফ বলেন, ‘সারা বছর ধরে একটা জমিতে আখ চাষ করতে হয়। বছর শেষে এই আখ বিক্রি করে চাল কেনা, সন্তানদের লেখাপড়া, ছেলেমেয়েদের খরচ, পরবর্তী চাষাবাদের খরচসহ পুরো সংসার চালাতে হয়। আখ বিক্রির মৌসুমে এসেও ঋণ করতে হচ্ছে। এভাবে কি বাঁচা যায়?’
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মোহামঞ্চদ আলী বলেন, ‘এমনিতেই চিনি শিল্পের দুরবস্থা। তারপর হরতাল অবরোধের কারণে এই শিল্প ধ্বংস হওয়ার পথে। অবরোধের মধ্যে জমি থেকে আখ আনতে গিয়ে চিনিকলের কয়েকটি ট্রাক্টর ও চাষিদের পাওয়ার ট্রলি ভাঙচুর হয়েছে। এ কারণে আমরা মাঝেমধ্যে আখ কেনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। চিনি বিক্রি করতে না পারায় চাষিদের আখের মূল্য পরিশোধ করতে পারছি না। আখচাষিদের স্বার্থে আখ ও চিনি সরবরাহ হরতালের আওতামুক্ত রাখা প্রয়োজন।’