Thank you for trying Sticky AMP!!

নিরাপত্তার নতুন ঝুঁকি আবাসিক হোটেল!

তিন বিদেশি পর্যটক গতকাল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার দেখতে যান। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তাঁরা লালবাগ কেল্লায় চলে যান। ছবিটি কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকা থেকে বেলা আড়াইটার দিকে তোলা l প্রথম আলো

মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত বিএনপি ও জামায়াতের দুই নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর করাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো পক্ষ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সে জন্য ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে সরকার। এর মধ্যে বিশেষ করে আবাসিক হোটেলগুলোর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে দেশের সব আবাসিক হোটেলে নজরদারি বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াতের দুই নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিয়ে দল দুটি নেতিবাচক ঘটনা ঘটাতে পারে। ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় তাদের ক্যাডার ও সন্ত্রাসীরা সেখানে থেকে সহজে ধ্বংসাত্মকমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশির ভাগ আবাসিক হোটেল অনুমোদন বা লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে। রাজধানী ঢাকাতে ছোট-বড় প্রায় ৯০০টি আবাসিক হোটেল আছে। অনুমোদন রয়েছে মাত্র ১৭৮টির। বড় কয়েকটি হোটেল ছাড়া মাঝারি ও ছোট েহাটেলগুলোর নিজস্ব কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই। ফলে এসব হোটেলে যে কেউ যেকোনো সময় ঢুকে নাশকতা ঘটিয়ে সহজেই পালিয়ে যেতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতিমধ্যেই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়, মিলনায়তন, সম্মেলনকেন্দ্রসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দ্বিগুণ করা হয়েছে। সচিবালয়ের চারপাশের সিসি ক্যামেরাগুলো সক্রিয় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সাদাপোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। দর্শনার্থীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার) ও ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ সফটওয়্যার (ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ) ব্যবহার করে যাতে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরাসহ অন্য কেউ কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে সংগঠিত হতে না পারে, সে জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করা হয় ১৮ নভেম্বর। তাতে বলা হয়, এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। গুজব ছড়িয়ে, ভুয়া ভিডিও বা ফটোশপের মাধ্যমে ধর্মীয়বিদ্বেষও ছড়াতে পারে তারা। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, গত বুধবার বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতের নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হওয়ার পরপরই দেশে ফেসবুক, টুইটার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে দেয় সরকার।
গোয়েন্দা সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বজুড়ে মৌলবাদী ও জঙ্গি গোষ্ঠী তাদের মতো প্রচার এবং নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করছে। বাংলাদেশেও ধর্মীয় উগ্রপন্থীসহ জামায়াত-শিবিরের তৎপরতা বাড়ছে এসব মাধ্যমে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ অ্যাপসগুলো কবে নাগাদ সচল হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবস্থার পরিবর্তন হলেই ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের মাধ্যমগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। নিরাপত্তার কারণে সাময়িকভাবে এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বের নানা দেশে এখন নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কারণ, সবার আগে নিরাপত্তা।