Thank you for trying Sticky AMP!!

নির্বাচনের 'আমেজ নেই'

‘নির্বাচন এলে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। মিছিল-মিটিং আর মাইকের আওয়াজে সরগরম হয়ে ওঠে এলাকা। কিন্তু এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নিলেও ধামরাইয়ে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় সেভাবে কিছু চোখে পড়ছে না। নির্বাচনের কোনো আমেজ নেই এখানে।’

বলছিলেন কারখানার শ্রমিক মকবুল হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে থাকেন ঢাকার ধামরাইয়ের জয়পুরা এলাকায়। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগাছায়। চাকরি করেন এখানকার একটি কারখানায়।

গত বৃহস্পতিবার ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মকবুলের কথার সত্যতা মিলল। নৌকা প্রতীকের পোস্টার ছাড়া আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীর পোস্টারও চোখে পড়েনি। ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনা নেই।

স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনে নির্বাচনী আমেজ নেই।

এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের বেনজির আহমেদ, জাতীয় পার্টির খান মোহাম্মদ ইসরাফিল, ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল মান্নান ও জাসদের (রব) এম এ মান্নান। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তমিজ উদ্দিন। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দেন। কিন্তু পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে তমিজ উদ্দিন নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত শুনানিতে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।

প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর তমিজ উদ্দিন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণায় নামেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা চাঙা হয়ে ওঠেন। কিন্তু তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্রের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেনজির আহমেদ। তাঁর যুক্তি, ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের আগে তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে গৃহীত হয়। বেনজিরের করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। এ কারণে আটকে যায় তমিজ উদ্দিনের নির্বাচনে অংশ নেওয়া। এই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন তমিজ উদ্দিন। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন। ফলে, তমিজ উদ্দিনের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ খুলে যায়। পরে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ চেম্বার বিচারপতির দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেন। এতে তমিজ উদ্দিনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ আবারও আটকে যায়।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনে অংশ নেওয়া আটকে যাওয়ায় ধামরাইয়ে ভোটের মাঠের উত্তাপ কমে যায়।

বিএনপির সমর্থক ইসলামপুরের ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। এবার শেষ মুহূর্তে এসে ধানের শীষের প্রার্থী আটকে যাওয়ায় ৩০ তারিখ ভোট দিতে যাব না।’ বিএনপির আরেক সমর্থক বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী নাই, কাকে ভোট দেব, সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।’

এই আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সাংসদ জিয়াউর রহমান খানকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে তমিজ উদ্দিনের প্রার্থিতা বৈধ হওয়ার পর দলের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।

তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগ করে আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে আমি নির্বাচন করতে পারছি না।’