নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তার আত্মপক্ষ সমর্থন
নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় করা দুটি মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ও র্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা গতকাল সোমবার আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন। এই চার আসামি আদালতের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন এবং সুবিচার চান।
গতকাল ছিল এই দুই মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের ধার্য দিন। সকালে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় নূর হোসেনসহ এই চার আসামি আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। অন্য তিনজন হলেন র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানা। এই চারজনের বিরুদ্ধে দুই মামলায় আনীত অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পড়ে শোনানো হয়। প্রত্যেককে আলাদা করে তাঁরা ‘দোষী’ না ‘নির্দোষ’, ‘সাফাই সাক্ষী দেবেন কি না’ এবং ‘আর কিছু বলবেন কি না’—এই তিনটি প্রশ্ন করা হয়। আদালত ৩১ অক্টোবর মামলার অন্য আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন নির্ধারণ করেছেন।
সকাল সোয়া ১০টায় কার্যক্রম শুরু হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তার ২৩ আসামিকেই কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। কার্যক্রমের শুরুতে আদালত চার আসামি—নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রমাণ পড়ে শোনাতে বলেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকনকে।
ওয়াজেদ আলী প্রথমে নূর হোসেনকে এ ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী, পরিকল্পনাকারী, অর্থ জোগানদাতা, অপহরণ এবং এতে সহায়তাকারী হিসেবে এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পড়ে শোনান। এরপর যেসব সাক্ষী নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁদের উদ্ধৃত করে সাত খুনের ঘটনার পরিকল্পনায় ও বাস্তবায়নে নূর হোসেনের সংশ্লিষ্টতার বর্ণনা তুলে ধরেন পিপি। সাত পৃষ্ঠার এই বর্ণনা পড়ে শোনানোর পর আদালতের প্রশ্নের জবাবে নূর হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, তিনি কোনো সাফাই সাক্ষী দেবেন না, তাঁর অন্য কোনো বক্তব্য নেই। তবে তিনি সুবিচার চান।
এরপর ওয়াজেদ আলী র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানাকে একইভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পড়ে শোনান। এই তিনজনের মধ্যে আরিফ হোসেন ও এম এম রানা নিজেদের লিখিত বক্তব্য আইনজীবীর মাধ্যমে জমা দেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৩০ এপ্রিল ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। কাউন্সিলর নজরুল ও তাঁর চার সঙ্গীকে হত্যার ঘটনায় একটি এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়ির চালককে হত্যার ঘটনায় আরেকটি মামলা হয় ফতুল্লা মডেল থানায়। প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে ৩৫ জনকে আসামি করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রভুক্ত ১২ আসামি পলাতক। তাঁদের মধ্যে ৮ জন র্যাবের সদস্য।
আরও পড়ুন
-
সকাল ৯টার ট্রেন ছাড়েনি বেলা ২টায়ও, স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়েছেন ক্লান্ত মা-মেয়ে
-
বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে সাংবাদিকদের বাধা ব্যাংক লোপাটকারীদেরই উৎসাহিত করবে: নোয়াব সভাপতি
-
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত
-
মোদির বিভাজনের রাজনীতির পেছনের কারিগর, যেভাবে উত্থান অমিত শাহর
-
ঝড়বৃষ্টি হতে পারে ৬ দিন ধরে, বলছে আবহাওয়া অফিস