Thank you for trying Sticky AMP!!

নয়নের চাহনিতে বাঁচার আকুতি

নয়ন

থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত সাত বছরের শিশু নয়ন হোসেনের বাবা পিকুল হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করছেন। আর মা নুর বানু চলে গেছেন তাঁর বাবার বাড়ি। এখন দাদি রেবেকা খাতুনের কাছে অনেকটাই বোঝা শিশু নয়ন।

ব্যয়বহুল এই রোগের চিকিৎসা করানোর মতো অর্থ নেই বাবা ও দাদির। ১৫ দিন পরপর নয়নের শরীরে রক্ত দিতে হয়। সেটাও দিতে না পারায় পেটটা অস্বাভাবিকভাবে ফুলে উঠেছে নয়নের। নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে নয়ন। তার সেই চাহনিতে কেবলই যেন বাঁচার আকুতি।

নয়ন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের পিকুলের একমাত্র ছেলে। পিকুল বলেন, তিনি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। তিনি নছিমন গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান। আট বছর আগে একই উপজেলার গান্না গ্রামে বিয়ে করেন। এক বছর পরই তাঁদের ঘরে নয়নের জন্ম হয়। নয়নের বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সংসার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অসুস্থ নয়নকে রেখে স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যান। আর দেড় বছর হয়েছে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।

পিকুল বলেন, নয়ন জন্ম থেকেই থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত বুঝতে পারেননি। মাত্র ছয় মাস বয়স হলে শিশুটি রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে কালীগঞ্জ শহরের চিকিৎসক আলতাফ হোসেনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি শনাক্ত করেন, নয়নের থ্যালাসেমিয়া হয়েছে। বাঁচাতে হলে প্রতি মাসে রক্ত দিতে হবে। এরপর থেকে তাঁরা নিয়মিত রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে সপ্তাহে একবার দিতে হচ্ছে। যা তাঁদের মতো দরিদ্র মানুষের পক্ষে খুবই কষ্টকর। ইতিমধ্যে ঝিনাইদহ শহরের কয়েকজন চিকিৎসককে দেখিয়েছেন। তাঁরা সবাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে বলেছেন। সেখানে নিয়ে একটি অস্ত্রোপচার করলে ভালো হতে পারে নয়ন। কিন্তু অর্থের অভাবে তাঁরা তাকে ঢাকায় নিতে পারেননি। বর্তমানে স্থানীয় এক হোমিও চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তিনি নয়নের উন্নত চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা আশা করছেন।

গত সোমবার নয়নের দাদি রেবেকা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মি ইসলামের দপ্তরে এসেছিলেন সহযোগিতার জন্য। রেবেকা বলেন, তাঁরা কোনো আর্থিক সহায়তা চান না। চান নয়নের ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা, চান তার অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা। তাহলেই বাঁচতে পারে অসহায় নয়ন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নয়ন থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। তার শরীরে এটা অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। এটা ঢাকার শিশু হাসপাতালে সম্ভব।