Thank you for trying Sticky AMP!!

পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হলো আরও পাঁচজন

আহতদের পরীক্ষা করে দেখছেন চিকিৎসক দল। ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে আরও পাঁচজনকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। এ নিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।

আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পাঁচজনকে। তাঁরা রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

নতুন ভর্তি হওয়া ব্যক্তিরা হলেন শাহিদা আক্তার, শাহিদার মেয়ে মিতু আক্তার, শাহিদার ননদ রোজিনা বেগম, রোজিনার ছেলে মো. হাসান, ও শাহিদার শাশুড়ি ফিরোজা বেগম। তাঁদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে।

হাসপাতালে এই পরিবারের তিনজন আত্মীয় প্রথম আলোকে জানান, এই পরিবারের সাত সদস্য শ্রীমঙ্গলে একটি বিয়ের দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তাঁদের কুমিল্লার লাকসামে নামার কথা। সেখান থেকে চাঁদপুরে। কিন্তু এর আগেই দুর্ঘটনায় পড়ে পরিবারটি। তাদের মধ্যে রোজিনার মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৫) মারা গেছে। সে বালিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। এ ছাড়া মিতুর শিশু ছেলে সামান্য আহত হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শাহিদার ভাই মো. মুন্নাফ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহিদাদের পুরো পরিবারটি ধসে পড়েছে। কেউ যে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করবে, ওষুধ এনে দেবে, কেউ নেই। শাহিদার স্বামী দেলোয়ার হোসেন দুবাইতে আছেন। আর রোজিনার স্বামী শাহ আলম দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। মেয়ে ফারজানাকে হারিয়ে রোজিনা পাগলপ্রায়।’

পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখা যায়, রোজিনা বেগম বিছানায় বসে কাতরাচ্ছেন। মেয়েকে হারিয়ে তিনি ‘আমার এত সুন্দর মেয়ে, আমার এত মেধাবী মেয়ে, এসএসসি পরীক্ষা দেবে’ বলে বিলাপ করছেন। এই দুর্ঘটনায় রোজিনার এক পা ভেঙেছে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেয়েছেন।

পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক আবদুল গণি মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুর্ঘটনায় এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৫ জন। সবার শারীরিক অবস্থা খারাপ। তবে এর মধ্যে দুজনের অবস্থা সবচেয়ে বেশি গুরুতর। হয়তো অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। আমি নিজে গিয়ে তাঁদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’

গত সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪৮ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনের বাইরে ঢাকাগামী আন্তনগর তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে ওই সংঘর্ষ হয়। ট্রেনের বগি লাফিয়ে উঠে যায় কয়েক ফুট ওপরে। দুমড়েমুচড়ে যায় কয়েকটি বগি। চারদিকে শুরু হয় চিৎকার। ওঠে কান্নার রোল। মারা যান ১৬ যাত্রী। আহত হন শতাধিক যাত্রী। হতাহতরা সবাই উদয়নের যাত্রী বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।