Thank you for trying Sticky AMP!!

পদ্মা সেতু: এক্সপ্রেসওয়ের জন্য টোল দিতে হবে ১ জুলাই থেকে

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া অংশ

ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য ১ জুলাই থেকে টোল দিতে হবে। ইতিমধ্যে এই মহাসড়কে মাঝারি মানের ট্রাকের জন্য কিলোমিটারপ্রতি ১০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীকালই বাস ও অন্যান্য পরিবহনের জন্য এক্সপ্রেসওয়ের টোলের হারের সিদ্ধান্ত আসবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আজ সোমবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি প্রজ্ঞাপনে ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ মহাসড়কে মাঝারি মানের ট্রাকের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা হারে টোল নির্ধারণের কথা জানানো হয়েছে। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফাহমিদা হক খান সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, টোল নীতিমালা ২০১৪ অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে টোলের হার নির্ধারণের আগপর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের টোলের হার নির্ধারণ করা হলো।

এটা কার্যকর হলে এই এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারে মাঝারি মানের একটি ট্রাকের টোলের পেছনে কত টাকা খরচ হবে, তার একটি হিসাব করা যাক। মাঝারি মানের একটি ট্রাক (৫ থেকে ৮ টন) পদ্মা সেতু ব্যবহার করলে টোল দিতে হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকা। আর ৮ থেকে ১১ টন ধারণক্ষমতার একটি মাঝারি ট্রাককে টোল দিতে হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকা। এর সঙ্গে যদি ৫৫ কিলোমিটার ১০ টাকা করে হিসাব করা হয়, সেখানে টোল আসে ৫৫০ টাকা। তাহলে (৮ থেকে ১১ টন ধারণক্ষমতার ট্রাক) টোল বাবদ খরচ হবে ৩ হাজার ৩৫০ টাকা। আর ৫ থেকে ৮ টন ধারণক্ষমতার মাঝারি মানের ট্রাকের টোল গুনতে হবে ২ হাজার ৬৫০ টাকা।

বর্তমানে ঢাকা থেকে ভাঙ্গায় যেতে পদ্মা সেতু ছাড়াও তিন জায়গায় টোল দিতে হয়। গতকাল রোববার মাইক্রোবাসে ওই পথে চলতে গিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার আগে মেয়র হানিফ উড়ালসড়কে ৮৫ টাকা টোল দিতে হয়। এরপর ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় ৭৫ টাকা আদায় করা হয়। আর পদ্মা সেতুতে ১ হাজার ৩০০ টাকা। ওপারে হাজি শরীয়তউল্লাহ সেতু ব্যবহারের জন্য টোল দিতে হয় ৬০ টাকা।

১ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ের টোল কার্যকর হলে এসব জায়গায় আর টাকা দিতে হবে না। সমন্বিতভাবে টোল আদায় করা হবে।

এক্সপ্রেসওয়েতে বাসসহ অন্য যানবাহনের ক্ষেত্রে কিলোমিটারপ্রতি টোল কত হবে, জানতে চাইলে উপসচিব ফাহমিদা হক খান প্রথম আলোকে বলেন, এ-সংক্রান্ত আলাদা একটি ফাইল অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আগামীকাল মঙ্গলবার আলাদা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন টোলের হার অনুযায়ী বাসের জন্য ৪৯৫ টাকা (বেস টোলের ৯০ শতাংশ), গাড়ির জন্য (সেডান) ১৩৮ টাকা (২৫ শতাংশ) এবং বাইকের জন্য ২৮ টাকা (৫ শতাংশ) টোল দিতে হবে। সে অনুযায়ী অন্যান্য যানবাহনের টোলও নির্ধারণ করা হবে।

যেভাবে টোল আদায় হবে

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে মোট ছয়টি টোল বুথ থাকবে। পদ্মার এপারে তিনটি, ওপারে তিনটি। এপারে তিনটি টোল বুথ থাকবে আবদুল্লাহপুর, ধলেশ্বরী ও শ্রীনগর এলাকায়। আর ওপারে কুলিয়াবাজার, মালি গ্রাম ও ভাঙ্গায় টোল বুথ থাকবে।

এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারীকে পুরো ৫৫ কিলোমিটারের জন্য ভাড়া গুনতে হবে কি না, জানতে চাইলে ফাহমিদা হক বলেন, একটি টোল বুথ থেকে আরেকটি টোল বুথ পর্যন্ত টাকা দিতে হবে। পুরো ৫৫ কিলোমিটারের জন্য টোল দিতে হবে না। সে জন্য ছয়টি টোল বুথ করা হয়েছে। এর মধ্যে কেউ যদি তাঁর গন্তব্যে পৌঁছান, তার আগের টোল বুথ পর্যন্ত টাকা দিতে হবে।

২০২০ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন, যা আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক নামে নামকরণ করা হয়। ১১ হাজার ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সড়কের প্রতি কিলোমিটারের ব্যয় বিবেচনায় এটি দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সড়ক।