Thank you for trying Sticky AMP!!

পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অমান্য করছেন শিক্ষকেরা

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ছয় মাস আগে অ্যাটেনডেন্স পাঞ্চ মেশিন স্থাপন করে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদের ওই সিদ্ধান্ত অমান্য করছেন অধিকাংশ শিক্ষকই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, কলেজে উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি (পাস কোর্স) শাখায় প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী আছেন। ৪১ জন শিক্ষক ও ১৩ কর্মচারীর উপস্থিতির তথ্য সংরক্ষণের জন্য কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী গত বছরের ৩০ আগস্ট কলেজে অ্যাটেনডেন্স পাঞ্চ মেশিন স্থাপন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের জাতীয় পার্টির সাংসদ নুরুল ইসলাম ওই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কিন্তু কলেজের ৪১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩৮ জনই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ওই শিক্ষকদের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন স্থগিত করে দেয়। কিন্তু পরে মানবিক দিক বিবেচনায় শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। এরপর পরিচালনা পর্ষদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিক্ষকদের আবারও পাঞ্চ মেশিন ব্যবহারের অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই শিক্ষকেরা তাঁদের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল পাশা পাটোয়ারী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. এনামুল হক ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. আজিজুল হক ও ১৩ জন কর্মচারী পাঞ্চ মেশিন ব্যবহার করছেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, পাঞ্চ মেশিন ব্যবহার না করায় শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
পরিচালনা পর্ষদের শিক্ষক প্রতিনিধি পারভেজ মিয়া দাবি করেন, শিক্ষকেরা নিয়মিত কলেজে উপস্থিত থাকেন। এর পরও পাঞ্চ মেশিন ব্যবহার করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ওই যন্ত্র ব্যবহার নিয়ে সরকারিভাবে কোনো আদেশ, পরিপত্র ও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য এ জেড এম শফিউদ্দিন শামীম বলেন, ‘শিক্ষকদের কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মেনে চলা দরকার। নিয়মিত উপস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে ওই যন্ত্র বসানো হয়েছে। বেসরকারি কলেজের চাকরিবিধিতে শিক্ষকদের কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মেনে চলার বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৩৮ জন শিক্ষক তা অমান্য করছেন।’
জানতে চাইলে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সাংসদ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাঞ্চ মেশিন বসানো হয়। এটা আমার একার সিদ্ধান্ত না। আমি সভাপতি হওয়ার আগেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলেজটি একসময় ভালো ফল করত। এখন শিক্ষকরা অনিয়মিত হওয়ায় পড়াশোনার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। শিক্ষকরা কেউ ব্যবসা করছেন, কেউ ঢাকা ও কুমিল্লায় বসে কোচিং করছেন। পাঞ্চ মেশিন একটি আধুনিক পদ্ধতি। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রমকে বেগবান করতে এটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।’