Thank you for trying Sticky AMP!!

পরিবারের তিন সদস্যসহ ব্যবসায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) দুটি শাখা থেকে ঋণ নিয়ে পাচারের অভিযোগে পরিবারের তিন সদস্যসহ এক ব্যবসায়ীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম পুলিশের বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর এ চিঠি দেন।

দুদকের জনসংযোগ বিভাগ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদকের চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

যাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন ব্যবসায়ী সাইফুর রহমান, তাঁর স্ত্রী সাজিয়া খাতুন, বাবা মীর আবদুস শাকুর এবং মা মীর হাসিনা বেগম।

সূত্র জানায়, গত মাসে পদ্মা ব্যাংকের পক্ষ থেকে দুদকে চিঠি দিয়ে এ চারজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংকের মাওনা শাখা থেকে মীর ট্রেডিংয়ের নামে ১৩ কোটি এবং মিরপুর শাখা থেকে লুব কেয়ারের নামে ১৭ কোটি টাকা ঋণ নেন সাইফুর রহমান। ব্যাংকের সে সময়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সহায়ক জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়ায় এ ঋণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) সহযোগিতায় ঋণ নেওয়া হয়। যে উদ্দেশে ঋণটি নেওয়া হয়, সেখানেও ওই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়নি। ব্যাংক মনে করছে ওই অর্থ পাচার করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ওই ঋণের জামিনদার ব্যবসায়ীর বাবা, মা ও স্ত্রী। তাঁরা সবাই দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ব্যাংক মনে করছে। তাই দুদকের সহযোগিতা চেয়েছে ব্যাংকটি।
ব্যাংকের তথ্য অনুসারে ওই ব্যবসায়ীর কাছে সুদসহ ব্যাংকের মোট পাওনা ৫২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

ফারমার্স ব্যাংকের জালিয়াতির ঘটনা ২০১৭ সাল থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। ইতিমধ্যে কয়েকটি মামলাও হয়েছে। ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল করা একটি মামলায় অভিযোগপত্রও অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। মাহবুবুল হক চিশতীসহ পাঁচজনকে আসামি করা হচ্ছে অভিযোগপত্রে। চিশতী ছাড়া যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে তাঁরা হলেন মাহবুবুল হক চিশতীর স্ত্রী রুজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ফারমার্স ব্যাংকের চাকরিচ্যুত এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও চাকরিচ্যুত ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খান। মামলার এজাহারে ৬ জনকে আসামি করা হলেও তদন্তে ব্যাংকের গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাঁকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়।

ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনাটি ২০১৭ সাল থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে নথিপত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী। এর মাধ্যমে দুজনের নৈতিক স্খলন ঘটেছে এবং তাঁরা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।

২০১২ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া ফারমার্স ব্যাংক যাত্রা শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। আস্থার সংকটে আমানতকারীদের অর্থ তোলার চাপ বাড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে পদ ছাড়তে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী।