Thank you for trying Sticky AMP!!

পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিতে নির্দেশ

ফাইল ছবি

পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিতে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী এক মাসের মধ্যে এই নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এই আদেশ দেন।

গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকার বায়ুর মান ও জনবল বিষয়ে ব্যাখ্যা ২ ফেব্রুয়ারি (আজ) জানাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। ঢাকার বায়ুর মান নিয়ে করা এক মামলায় আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক শুনানিতে সেদিন ওই আদেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের ওই নির্দেশ অনুসারে আজ (২ ফেব্রুয়ারি) আদালতে হাজির হন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদ। আদালত তাঁর বক্তব্য শোনেন।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করীম।

শুনানিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ঢাকাসহ বড় বড় শহরের সার্বিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের সেমিনারের তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার বায়ুর মান খারাপ ছিল। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বায়ুর মান আরও বেশি খারাপ হয়েছে। কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উন্নয়ন ও নির্মাণ কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি ঘটেছে। বায়ু দূষণের উৎস হিসেবে ইটভাটা, যানবাহন, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন, নির্মাণকাজ, পৌর বর্জ্য, বায়োমাস পোড়ানো, ট্রান্স বাউন্ডারি প্রভাবকে দায়ী করা হয়।

শুনানিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের জনবল স্বল্পতা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্বল্পতার প্রসঙ্গ তোলেন আবেদনকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, অধিদপ্তরের অর্গানোগ্রাম অনুসারে আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকার কথা। আছে মাত্র তিনজন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে তিনি আদালতের নিদর্শনার আরজি জানান।

পরে আদালত আদেশ দেন। একই সঙ্গে বায়ুদূষণ রোধে আদালতের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে আগামী ১০ মার্চ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

গত ২৬ নভেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এক আদেশে ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণের কারণ ও দূষণ কার্যক্রম রোধ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত।

এর ধারাবাহিকতায় পরিবেশসচিব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়।

‘ঢাকার বাতাসে নতুন বিপদ’ শিরোনামে গত বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে গত ২৭ জানুয়ারি একটি রিট করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন। সেদিন আদালত বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর রাস্তাসহ নির্মাণাধীন জায়গা ঘিরে দেওয়া, ধুলামাখা স্থানে দুই বেলা পানি ছিটানো ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে নির্দেশ দেন। রাজধানীতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইচআরপিবি আরেকটি আবেদন করেছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৬ নভেম্বর আদেশ দেওয়া হয়।