Thank you for trying Sticky AMP!!

পানিতেই চলছে পাঠদান

তালার ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানির ওপর বেঞ্চে বসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা ষ ছবি: প্রথম আলো

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় অর্ধশতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রায় দেড় মাস ধরে প্লাবিত হয়ে আছে। এসব বিদ্যালয়ের ঘরে অথবা আঙিনায় হাঁটুসমান পানি। এরই মধ্যে চলছে পাঠদান। কোনো কোনো বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে পাশের বাড়ি কিংবা উঁচু জায়গায়।
গত শনিবার সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর, গোনালী, হরিশচন্দ্রকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করুণ দশা দেখা গেছে। তালা উপজেলা সদর পেরিয়ে মোবারকপুর থেকে গোনালী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়ক ও গ্রাম ডুবে রয়েছে। সড়কের ওপর কোথাও তিন-চার ফুট পানি, আবার কোথাও আরও বেশি। ভিজে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল পানিতে ডুবে রয়েছে বিদ্যালয়ের মেঝে।
গ্রামের কয়েকজন জানান, একটি বাড়িতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নেওয়া হচ্ছে আরেক স্থানে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে বসে শিশুরা ক্লাস করছে। শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, প্রায় এক মাস আগে তাঁরা বিদ্যালয় ভবন ছেড়ে এখানে ক্লাস করছেন। চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী পূজা বিশ্বাস জানায়, তাদের অনেককে বিদ্যালয়ে এসে আলাদা পোশাক পরতে হয়।
হরিশচন্দ্রকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আমিনুর রহমান ও অনিত বিশ্বাস জানায়, কয়েক দিন আগে তাদের বিদ্যালয়ের কক্ষে হাঁটুসমান পানি ছিল। এখন পানি না থাকলেও বিদ্যালয়ে আসতে হয় পানির মধ্য দিয়ে। ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানির মধ্যে টুল-বেঞ্চ, টেবিল ও ইট দিয়ে উঁচু করে মাচা তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি একাই পর্যায়ক্রমে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নিচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম জানান, বর্তমানে শিক্ষক না থাকায় তাঁকে একা সব ক্লাস নিতে হচ্ছে। শিশু শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রী কেয়া মণ্ডল, সবুজ মণ্ডলসহ কয়েকজন জানায়, প্রায় দেড় মাস ধরে তারা পানির মধ্যে ক্লাস করছে। একজন শিক্ষক ছাড়া আর কেউ নেই। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উপজেলার রাঢ়িপাড়া, নওয়াপাড়া, দেওয়ানীপাড়া, মাঝিহারা, মোবারকপুর, হরিশচন্দ্রকাঠি, গঙ্গারামপুর, ইসলামকাঠি, খারাইল, উত্তর ঘোনা, কাশিপুর, ওমরপুর, সমঞ্চনডাঙ্গাসহ অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এভাবে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে আছে। ৫০টির বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরে কিংবা আঙিনায় হাঁটুসমান পানি। কিন্তু সামনে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা ছাড়াও বার্ষিক পরীক্ষা। ফলে নানা অসুবিধার মধ্যেও শিক্ষকদের ক্লাস চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে পানি আগের চেয়ে একটু কমেছে। আর ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক না থাকায় সেখানে দুজনকে প্রেষণে দিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর জানানো হয়েছে। কিন্তু পাঁচ মাসেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি।