Thank you for trying Sticky AMP!!

পাশে থাকার আনন্দ

মাগুরায় সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনের পক্ষে ত্রাণ বিতরণ করছেন সাকিবের বাবা মাশরুর রেজা (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

রান দরকার। হয়তো সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি, একটা বল দেখে শেষ বলে ছক্কা মারার চেষ্টা করব। কিন্তু ওই দুই বলের প্রথমটাই যদি বড় কিছু করার মতো হয়ে যায়, তাহলে কি আর শেষ বলের জন্য বসে থাকা যায়!

সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনও এ মুহূর্তে শুরু করার পরিকল্পনা ছিল না। পরিকল্পনা ছিল আস্তে–ধীরে কার্যক্রম শুরু করব। আমি খেলার মানুষ। ভেবেছিলাম, খেলার বড় একটা অনুষ্ঠান করে বা একটা একাডেমি দিয়ে ফাউন্ডেশন শুরু করব। এসে গেল করোনাভাইরাস!

এর ফলে জরুরি ভিত্তিতেই ফাউন্ডেশনের কাজ শুরু হয়েছে। আমি এখন যুক্তরাষ্ট্রে। এখানে বসেই দেশে সবার সঙ্গে আলোচনা করে কাজ চলছে। তহবিল তৈরির জন্য ব্যাটের নিলাম করেছি। কয়েকটি লাইভ অনুষ্ঠান করলাম। এ ছাড়া আমার যেখান থেকে যা আয় হবে, তার ১০-১৫ শতাংশ ফাউন্ডেশনে দিয়ে দেব। বাকিটা অনুদানে।

ভবিষ্যতে তহবিল গড়ার জন্য কিছু পরিকল্পনা আছে। সবই প্রাথমিক পর্যায়ে। মহামারি শেষ হলে গুছিয়ে শুরু করতে করতে বছর দুয়েক লাগবে। আমার তো খেলাধুলাও আছে। এদিকে পুরো মনোযোগ দিতে তাই সময় লাগবে। ফলাফল আসবে হয়তো চার–পাঁচ বছর পর।

আমরা মিশন সেভ বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি। ওখানে বড় তহবিল দিয়েছি। এতে বহু মানুষের খাবারের ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া বগুড়ায় মুশফিকুর রহিমের এলাকায়, মাগুরাও ঢাকায় অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

আমাদের কাছে নানা প্রস্তাবই আসছে। সব করা সম্ভব নয়। সে জন্য কাজ সীমিত পরিসরে রেখেছি। পিপিই দিচ্ছি, খাবার দিচ্ছি, টেস্টিং কিট দিচ্ছি।

দেখেছি, চিকিৎসকদের পিপিই (সুরক্ষাসামগ্রী) দিতে পারলে খুব ভালো হয়, তবে অবশ্যই ভালো মানের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা উঁচু মানের পিপিই দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে পরিমাণ কমেছে, তবে মান ঠিক রয়েছে। পুলিশ আর সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও আমরা পিপিই দেব। এর বাইরে আমরা কনফিডেন্স গ্রুপের সাহায্যে চীন থেকে টেস্টিং কিট এনেছি। সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছি।

বগুড়ায় সাকিব আল ফাউন্ডেশনের ত্রান বিতরণের প্রস্তুতি। ছবি: সংগৃহীত

করোনায় মৃতদের দাফনের সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত এ কাজটাও আমরা ধরব। এ জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি, প্রতিটি টাকা যেন কাজে লাগে।

ভবিষ্যতে এ ফাউন্ডেশন তিনটি জায়গায় কাজ করবে—ক্রীড়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য। খেলার জন্য একটা একাডেমি করার পরিকল্পনা আছে। শুরুতে থাকবে ক্রিকেট। পরে ফুটবলসহ অন্যান্য খেলা। টাকার অভাবে ভালো যেসব খেলোয়াড় খেলতে পারছেন না, তাঁদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। নতুন প্রতিভা অন্বেষণ করবে।

একাডেমি নিয়ে আপাতত দুই ধরনের পরিকল্পনা। একটা ঢাকাকেন্দ্রিক, আরেকটা ঢাকার বাইরে। ঢাকার বাইরে আর্থিক সহায়তা বা অনুদান অনেক বেশি লাগবে। ঢাকার প্রতিষ্ঠানটি কিছুটা বাণিজ্যিক হবে, কারণ এটিকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে হবে। ঢাকায় সে সুযোগ আছে।

ফাউন্ডেশনটা দাঁড়িয়ে গেলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। সবই নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। ফাউন্ডেশন নিয়ে যা যা হচ্ছে, তার সবকিছুর সঙ্গেই আমি সম্পৃক্ত। বাংলাদেশে সম্পৃক্ত থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এ শিক্ষা আমি পেয়েছি।

অনুলিখন: তারেক মাহমুদ