Thank you for trying Sticky AMP!!

পাহাড়ে সচেতনতার বার্তা

পাহাড়ে সচেতনতা তৈরির কাজে নারীর অংশগ্রহণই বেশি

পার্বত্য অঞ্চলের নারী ও শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প। করোনাকালেও পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে প্রকল্পটির অধীনে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। করোনাকালে টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পে নেওয়া পদক্ষেপগুলো সংক্রমণ রোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। বড় কথা হলো, করোনাকালে পাহাড়ে সচেতনতা তৈরিতে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো।

করোনাকালের কার্যক্রম

● পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের অধীনে তিনটি পার্বত্য জেলা—বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সাড়ে চার হাজার পাড়াকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি পাড়াকেন্দ্রেই একজন করে প্রশিক্ষিত পাড়াকর্মী রয়েছেন। পাড়াকর্মীদের ৯৫ শতাংশই নারী।

● করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে পাড়াকর্মীদের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রতিটি এলাকায় বাড়ি বাড়ি সচেতনতামূলক লিফলেট ও পোস্টার বিলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁরা সবাইকে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতি, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার মতো বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিয়েছেন।

● করোনা মহামারির সময় শিশুরা যেন পড়ালেখা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে, সে জন্য গত জুলাই থেকে ‘আমার শিশু ঘরে থাকে, ঘরে শেখে’ শিরোনামে একটি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ৩ থেকে ৬ বছর বয়সী ৫৪ হাজার ৪৪২টি শিশুর কাছে বই, খাতা, কলমসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

● অভিভাবকেরা নিজেদের সুবিধামতো সময়ে বাড়িতেই শিশুদের পড়াতে পারবেন, এমন একটি মাসিক রুটিন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেটি লেখা হয়েছে সহজ-সরল ভাষায়। ফলে পড়াশোনা কম জানা বাবা–মায়েরাও সহজে সন্তানদের পড়া দেখিয়ে দিতে পারবেন। প্রকল্পের শুরুতে সংগঠনটির পাড়াকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের কর্মপরিকল্পনা বুঝিয়ে দিয়েছেন। পরে তাঁরা নিয়মিতভাবে অভিভাবকদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নিয়েছেন।

● মহামারির এ সময়েও নারী ও শিশুদের পুষ্টিহীনতার হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিশুর বাড়িতে নিয়মমাফিকভাবে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কিশোরী, অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারীর কাছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আয়রন বড়ি বিতরণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

● এ প্রকল্পের কর্মকর্তারা কয়েক দফায় এলাকার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যেন তাঁদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে যায়।

আমাদের কর্মীরা শুরু থেকে কাজ করেছেন

প্রকাশ কান্তি চৌধুরী

প্রকল্প পরিচালক, টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প এবং উপসচিব (সদস্য পরিকল্পনা), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের মাঠকর্মী ও পাড়াকর্মীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে কয়েকজন করোনায় আক্রান্তও হয়েছেন। তবে সেবা কার্যক্রম থেমে থাকেনি। তাঁদের পরিশ্রম আর স্থানীয়দের সহায়তায় করোনার সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কমানো সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় নারীদের মধ্য থেকেই পাড়া ও মাঠকর্মী বাছাই করা হয়। তাঁদের দেওয়া সচেতনতামূলক বার্তাগুলো মানুষ সাদরে গ্রহণ করেছেন ও মেনে চলেছেন।

আমাদের কার্যক্রমগুলো বেশ প্রশংসিত হয়েছে। কিছুদিন আগে ইউনিসেফের মূল ওয়েবসাইটে ‘আমার শিশু ঘরে থাকে, ঘরে শেখে’ কার্যক্রমটি নিয়ে বড় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

গ্রন্থনা: প্রথম আলো