Thank you for trying Sticky AMP!!

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে, সুপার ক্রিটিক্যাল ক্লাবে বাংলাদেশ

বিদ্যুৎ সংযোগ

পটুয়াখালীর পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে গত মঙ্গলবার কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিট  বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট থেকে উৎপাদন শুরু করে।  আমদানি করা কয়লা দিয়ে এটিই দেশের  প্রথম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেন্দ্রটিতে বাংলাদেশ ও চীনের সমান মালিকানা রয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছিল। তারপর গত ১৪ মে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

পায়রা কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল ক্লাবে প্রবেশ করেছে। এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে এশিয়াতে ৭ম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম এসেছে। দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতে এ ধরনের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া এশিয়ার চীন, তাইওয়ান, জাপান ও মালয়েশিয়াতে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কেন্দ্রগুলোতে চীন ও বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো ঢাকনাযুক্ত কোল ইয়ার্ড ব্যবহার করে না।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিক বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল)। এ কোম্পানিতে দেশের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) সমান মালিকানা রয়েছে। বিসিপিসিএল পায়রাতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এটি দেশের সব থেকে বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। প্রতিটি কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি করে ইউনিট রয়েছে। এ নিয়ে প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট উৎপাদনে এল, বাকি দুটি ইউনিট আগামী বছরে উৎপাদনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পটুয়াখালী সদর হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর উপজেলায় নবনির্মিত ৪০০ / ২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে যুক্ত হয়ে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ আসবে।

তবে এখনো সঞ্চালন লাইন তৈরি না হওয়াতে কেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে না। এখন দুটি ইউনিটকে অর্ধেক লোডে চালানো হবে। গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিনবাজর পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হবে আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ। এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ হলে পায়রার বিদ্যুৎ ঢাকায় আনা সম্ভব হবে।
জানতে চাইলে এনডব্লিউপিজিসিএল এবং বিসিপিসিএল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রকৌশলী এ. এম. খোরশেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে কম কয়লা পুড়িয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এ প্রযুক্তিতে পরিবেশ দূষণ হয় না। দূষণ নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোল ইয়ার্ডটি ঢাকনাযুক্ত। আমরা ছাড়া কেবল এশিয়াতে চীনই এ ধরনের কোল ইয়ার্ড ব্যবহার করে। জাপানেও এ ধরনের কোল ইয়ার্ড নেই। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সালফার ডাই অক্সাইড নির্গমনের হার মাত্র ৭০ থেকে ৮০ মিলিগ্রাম। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের বেঁধে দেওয়া মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম।

দেশে পায়রা ছাড়াও মাতারবাড়িতে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে রাষ্ট্রীয় কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। কেন্দ্রটির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে জাপানি একটি কোম্পানি। সুপার ক্রিটিক্যালের চেয়ে দুই ভাগ উৎপাদন দক্ষতা বাড়লেও ব্যয় অনেকটা বৃদ্ধি পায়। সংগত কারণে অনেক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আগ্রহী হয় না।