Thank you for trying Sticky AMP!!

পিরোজপুরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫

মানবতাবিরোধী অপরাধ

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার ভোরে উপজেলার হেতালিয়া ও চরখালী গ্রাম থেকে পিরোজপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁদের গ্রেপ্তার করে। বিকেলে পিরোজপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামানের আদালতে আসামিদের হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার হেতালিয়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে ফজলুর হক হাওলাদার (৭৫), একই গ্রামের মৃত হাসেম আলী হাওলাদারের ছেলে আবদুল মান্নান হাওলাদার (৭৪), মৃত আফসার আলী হাওলাদারের ছেলে আজাহার আলী হাওলাদার (৮৮), মৃত নজর আলী হাওলাদারের ছেলে আশরাফ আলী হাওলাদার (৬৭) ও একই উপজেলার চরখালী গ্রামের মৃত মহব্বত আলী হাওলাদারের ছেলে মহারাজ হাওলাদার (৬৮)। 

এ মামলার মোট আসামি আটজন। এর মধ্যে প্রধান আসামি আমির হোসেন হাওলাদারসহ তিনজন পলাতক রয়েছেন।

পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থার নির্দেশে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার ও তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরে ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের ২৬ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের শহীদ নিরোধ চন্দ্র বালার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা বিজয় কৃষ্ণ বালা বাদী হয়ে উপজেলার হেতালিয়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে আমির হোসেন হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে পিরোজপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সত্যব্রত সিকদারের আদালতে মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। এরপর তদন্ত সংস্থার তদন্ত কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সত্য রঞ্জন রায় মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তারের জন্য পিরোজপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বার্তা পাঠানো হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর (৯ কার্তিক) ভোরে আসামিরা পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামে বিজয় কৃষ্ণ বালার বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবাসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের বনমালী গাছারুর বাড়ির পুকুরপাড়ে নিয়ে এক দড়িতে বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে বিজয় কৃষ্ণ বালা বেঁচে গেলেও তাঁর বাবা নিরোধ চন্দ্র বালা, ছোট ভাই রণজিৎ বালা, বোনের স্বামী সুকুমার মিস্ত্রি, প্রতিবেশী গন্ডাচরণ হালদার, অমূল্য মিস্ত্রি, সমীর মিস্ত্রি মারা যান। এ ছাড়া ৩ জুন (২০ জ্যৈষ্ঠ) আসামিরা পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের উপেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, চিত্র রঞ্জন ব্যাপারী, সতীশ চন্দ্র ব্যাপারী, শরৎ চন্দ্র মাঝি, প্রকাশ হালদারকে গুলি করে হত্যা করে। আসামিরা বিভিন্ন সময় একই গ্রামের আরও ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে। আসামিরা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারীদের ধর্ষণ করে।