Thank you for trying Sticky AMP!!

পুঠিয়ার ওসির বিরুদ্ধে এজাহার বদলের অভিযোগ: বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার এজাহার বদলে দেওয়ার অভিযোগ বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত করে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে রাজশাহীর মুখ্য বিচারিক হাকিমকে এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। খুনের শিকার শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানা ৮ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

এজাহার বদলের অভিযোগ ওঠার পর ওসি শাকিলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

দুর্নীতি ও ফৌজদারি মামলায় সম্পৃক্ততায় ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওসিকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজশাহীর পুলিশ সুপার ও পুঠিয়া থানার ওসিসহ সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পরে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তাঁর মেয়ে নিগার গত ১১ জুন পুঠিয়া থানায় আবদুর রহমানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দাখিল করেন। পরে ওসি শাকিল উদ্দিন এজাহার সংশোধন করতে বলেন। পরে এজাহার সংশোধন করে দাখিল করা হয়। এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা করেন। তখন পুলিশ একটি এজাহার দাখিল করে। এই এজাহার অনুসারে, গত ১১ জুন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তবে আসামি হিসেবে ওই আটজনের নাম নেই। যে এজাহার নথিভুক্ত হয়েছে, তা নিগারের নয়। নিগারের দাখিল করা এজাহার বদলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওসির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ এবং ফৌজদারি মামলাও রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে কোনো ফল না পেয়ে নিগার রিটটি করেন।

রিট আবেদনকারী পক্ষ জানায়, গত ১১ জুন পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার একটি ইটভাটা থেকে পুঠিয়া উপজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে তিনি গত ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সংগঠনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত ২৫ এপ্রিল নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়, যেখানে আবদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে ফলাফল নিয়ে রাজশাহীর আদালতে নুরুল ইসলামসহ অন্যরা মামলা করেন। নুরুল ইসলামের দাবি, তিনি ৬০২ ভোট পেয়েছেন, আবদুর রহমান পেয়েছেন ৫২০ ভোট। ওই মামলার ধারাবাহিকতায় গত ৯ জুন রাজশাহীর আদালত আবদুর রহমানসহ তিনজনের দায়িত্ব গ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা দেন, যা গত ১০ জুন বিবাদীর প্রতি জারি হয়। আর ১০ জুন রাতে নিখোঁজ হন নুরুল, পরদিন তাঁর লাশ পাওয়া যায়।