Thank you for trying Sticky AMP!!

পুনর্নির্মাণের ২ মাসেই বেহাল সড়ক

উজিরপুরের ধামুরা-সাতলা সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। গত মঙ্গলবার রামেরকাঠী কর্মকার বাড়িসংলগ্ন এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

বরিশালের উজিরপুরের ধামুরা-সাতলা সড়কটি পৌনে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু দুই মাস না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কটি বেহাল। এখন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পরও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ধামুরা-সাতলা ভায়া চেরাগ আলী মার্কেট সড়কের ৫ কিলোমিটার বেহাল হয়ে ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ওই ৫ কিলোমিটার পুনর্নির্মাণের জন্য পৌনে ৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিংকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। গত ৩০ জুন কাজ শেষ করে চূড়ান্ত বিল তুলে নেন ঠিকাদার। 

গত মঙ্গলবার দেখা যায়, ধামুরা-সাতলা সড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফেটে গেছে এবং ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রামেরকাঠী থেকে চেরাগ আলী মার্কেটের প্রায় দুই কিলোমিটার। এ ছাড়া ধামুরা কলেজ, রামেরকাঠী কর্মকার বাড়ির সামনে, চুনপোড়া ও ওটরা এলাকায় সড়ক ভেঙে গেছে। 

ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা মোজাম্মেল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, সড়কটি নির্মাণে দুর্নীতির মহোৎসব হয়েছে। ঠিকাদার ও এলজিইডির কর্তৃপক্ষ সড়ক পুনর্নির্মাণের নামে সরকারি অর্থ ভাগাভাগি করেছে। দীর্ঘ পাঁচটি বছর সড়কে যানবাহন চলাচল না করায় হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সড়ক নির্মাণে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করায় সরকারি টাকা ব্যয় হয়েছে, কিন্তু সড়কের চেহারার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

তারা শিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ও ওটরা বাজারে ব্যবসায়ী কবির হোসেন হাওলাদার বলেন, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এলজিইডির কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার অনিয়মের অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী। এরপর তাঁরা প্রকল্প স্থান পরিদর্শনে আসেননি। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেননি। ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামতো কাজটি শেষ করেন। 

ওই সড়কে চলাচলকারী বাসের চালক সাব্বির হোসেন ও নাজু সরদার বলেন, ‘সড়কের দুরবস্থার কারণে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সড়কটি পুনর্নির্মাণ করায় আশা করেছিলাম কিছুদিন নিরাপদে চলাচল করা যাবে। কিন্তু দুই মাসেই রাস্তাটি শেষ গেছে। খানাখন্দের কারণে দুর্ঘটনা লেগেই আছে।’

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী আমির হোসেন বলেন, ধামুরা–সাতলা সড়কটি পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে অনেক উঁচু করে নকশা করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত দরপত্রে সড়ক সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রকার প্রোটেকশন ওয়ার্ক (বাজেট) ধরা ছিল না। যে কারণে রাস্তার বিভিন্ন অংশ ভেঙে যেতে পারে। যদি খানাখন্দ হয়েই থাকে সে ক্ষেত্রে আমি নিজ দায়িত্বে মেরামত করে দেব।’ 

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকৌশলী ইউনুস আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। 

বরিশাল এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম জিয়াউল হক বলেন, সড়ক নির্মাণকালে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তা ছাড়া কাজের গুণগত মান ঠিক রেখেই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে।