Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে ব্যস্ত দুই পক্ষ

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিবাদ বন্ধ হয়নি। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের চেয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দুই পক্ষ এখন ব্যস্ত। একটি পক্ষে কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতারা এবং বিপরীত স্রোতে রয়েছেন পদবঞ্চিত ব্যক্তিরা।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সামনে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় দুটি মোটরসাইকেল। এ জন্য পদবঞ্চিত ব্যক্তিরা দায়ী করছেন কমিটিতে জায়গা পাওয়া নেতাদের।
নবগঠিত মন্ত্রিসভার দুই সদস্য মোশাররফ হোসেন ও সাইফুজ্জামান চৌধুরী বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাদের সঙ্গে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ওই সময় উভয় মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে মোশাররফ হোসেন তাঁদের স্লোগান বন্ধ করতে বলেন। তাতেও কাজ হয়নি। পরে উচ্ছৃঙ্খল যুবকেরা দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন।
দলীয় সূত্র জানায়, গত ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এর পর থেকে পদবঞ্চিত ব্যক্তিরা চট্টগ্রামে মিছিল-সমাবেশ করে আসছেন। তাঁদের অভিযোগ, কমিটিতে জায়গা পাওয়া নেতাদের সংগঠনের কাজে অভিজ্ঞতা নেই। এ ছাড়া চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত কিছু নেতা কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন।
পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিটির সবার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলন কমিটিতে জায়গা পাওয়া কিছু নেতার বিরুদ্ধে, যাঁরা নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি গঠিত হলে সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়বে।’
এই নেতা আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আমরা দুই মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে গিয়েছিলাম। এই সময় আমাদের জ্যেষ্ঠ দুই ভাইয়ের মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেন অভিযুক্ত নেতাদের অনুসারীরা। আসলে এভাবে রাজনীতি চলতে পারে না।’
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে পদবঞ্চিত এই ছাত্রনেতা সাধারণ সম্পাদকসহ দু-তিনজনের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাধারণ সম্পাদক রনি মির্জার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল। রনিকে এত বড় দায়িত্ব দেওয়া ঠিক হয়নি।
জবাবে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি মির্জা বলেন, ‘সার্কিট হাউসে পদবঞ্চিত এবং কমিটিতে জায়গা পাওয়া নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর সঠিক নয়। নগরের কলেজকেন্দ্রিক নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই কাণ্ড ঘটেছে, যার সঙ্গে আমাদের ন্যূনতম সম্পর্ক ছিল না। এটা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু নয়।’
চাঁদাবাজি নিয়ে অভিযোগ সম্পর্কে রনি মির্জা বলেন, ‘এটা মিথ্যা কথা। নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে কমিটি গঠন হওয়ায় কিছু লোক উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন।’
রনি বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১০১ সদস্যের কমিটি হওয়ার কথা ছিল। কেন্দ্র পরিধি বাড়িয়ে ১২১ জনের কমিটি করবে বলে শোনা যাচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে উত্তেজনা আর থাকবে না। আমরা সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কাজ শুরু করতে পারব।’ ২০০২ সালে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছিল। ওই কমিটি দিয়ে ১১ বছর চট্টগ্রাম নগরে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল। তখন ছাত্রলীগের মধ্যে এত বিবাদ ছিল না।