Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনায় মুখর সংসদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও এর প্রধান গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কঠোর সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন সরকারি দলের সাংসদেরা ।

সাংসদেরা বলেছেন, এই জোটের কোনো আদর্শ নেই। এটি কোনো নির্বাচনী জোটও নয়। বরং এটি অশুভ শক্তির জোট। তারা অনির্বাচিত সরকার গঠন করে ক্ষমতার স্বাদ পেতে চায়।

শেখ হাসিনা ইন্টার প্রেস সার্ভিস নিউজ এজেন্সি-ইউএন-এর কাছ থেকে হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড এবং গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশনের কাছ থেকে স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড ফর লিডারশিপ সম্মাননা পাওয়ায় মঙ্গলবার সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সংসদের সরকার দলের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বিশ্বে শেখ হাসিনার মানের তিন থেকে চারজন প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। তার সকল ধ্যানধারণা জনকল্যাণে নিয়োজিত। এ রকম একজন নেতার অধীনে কাজ করে তাকে সহযোগিতা করার আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমি আর নির্বাচন করছি না। এ জন্য এটা আমার শেষ বক্তৃতা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে থাকছি না। আমি অবসরে যাচ্ছি, তবে চলে যাচ্ছি না। আই অ্যাম নট অফ, আই অ্যাম অ্যারাউন্ড।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, যারা ঐক্য করেছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি না। তারা স্বাধীনতার শক্তি না। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তারা সহ্য করতে পারছে না।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বিশ্বের সম্মানিত ও মর্যাদাশীল নেতা। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিশ্বের ইতিহাসে শেখ হাসিনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

ঐক্য ফ্রন্ট সম্পর্কে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ড. কামাল হোসেন বলেছেন তিনি তারেক জিয়ার সঙ্গে ঐক্য করেননি, জামাতের সঙ্গে ঐক্য করেননি। যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সেই বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করে তিনি কী করে বলেন তারেক জিয়ার সঙ্গে ঐক্য করেননি। স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে ঐক্য করে তিনি কী করতে চান, জানি না।

আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না। সরকার থাকবে, সংসদ থাকবে, নির্বাচন কমিশনও নির্বাচন করবে। আর এই নির্বাচনেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আবারও সরকার গঠন করবে।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে নানা উসকানি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধৈর্য ধারণ করেছেন। মিয়ানমার সরকার এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হচ্ছে। একদিন তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতেও বাধ্য হবে।

মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ধরনের খেলাধুলা শুরু হয়েছে। ২০১৪ সালেও করেছিলেন, কোনো ফল পান নাই, এবারও পাবেন না। লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবেন। কারণ মানুষ শেখ হাসিনার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, মিয়ানমার বারবার উসকানি দেওয়ার পরেও বাংলাদেশ ধৈর্য ধরেছে। সেই সফল কূটনীতির ফল এখন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রপ্রধান অং সান সূচির আন্তর্জাতিক সম্মান কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একের পর এক সম্মানে ভূষিত করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আদর্শ বিবর্জিত কিছু দল মিলে একটি জোট করেছে। এটা আদর্শিক কোনো জোট নয়। নির্বাচনী জোটও নয়। এটা ভণ্ডামি ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। এদের লক্ষ্য ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করে নতুন কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় আনা। তাদের মাধ্যমে ক্ষমতার স্বাদ পেতে চায়। তবে তাদের এই আশা পূরণ হবে না।

মইনুল হোসেনের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হয়ে এই ব্যক্তি দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তারের পর বলেছিলেন, চুনোপুঁটি নয়, আমরা রাঘব বোয়ালকে কারাগারে নেব। যেই ব্যক্তিটি (মইনুল হোসেন) মামলা দিয়েছিলেন এখন তাঁর সঙ্গেই জোট করে মামলার প্রত্যাহার চান।

জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমালোচনা করে দীপু মনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতা বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি কখনো ভোটে জিততে পারেননি। আর আওয়ামী লীগকে ছেড়ে যাওয়ার পর জামানতও হারিয়েছেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনার পক্ষে থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের উচিত জবাব দেবে।

বিএনএফ-এর এসএম আবুল কালাম আজাদ, শেখ হাসিনা এই সংসদের সর্বদলীয় নেতা। শান্তি বা সংসদীয় গণতন্ত্র বা বিশ্ব কূটনীতির জন্য নোবেল পুরস্কার দিতে হলে শেখ হাসিনাকেই দিতে হবে। বিশ্ব নেতৃত্ব রাজনৈতিকভাবে পরিপক্ব হলে শেখ হাসিনাকে অনন্ত পাঁচটি নোবেল দিতেন।

ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আরও আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আলী আশরাফ, আবদুল মতিন খসরু, জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি, জাসদ একাংশের সদস্য মইনউদ্দীন খান বাদল, জাসদ একাংশের সদস্য শিরিন আখতার, স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী প্রমুখ।