Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রশান্ত হালদারসহ ২০ জনের পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ

প্রশান্ত কুমার হালদার। ফাইল ছবি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) পরিচালক পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া প্রশান্ত কুমার হালদারসহ পরিবারের আট সদস্য এবং কোম্পানির ১২ জন কর্মকর্তার পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদকে নিযুক্ত করেছেন হাইকোর্ট।

আইএলএফএসএলের সাত বিনিয়োগকারীর টাকা ফেরত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গত রোববার এই আদেশ দেন। আজ মঙ্গলবার তা প্রকাশ পেয়েছে। আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী এস এম শাহরিয়ার কবির প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এস এম শাহরিয়ার কবির বলেন, প্রশান্ত কুমার হালদারসহ অন্যরা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সে ব্যাপারে হাইকোর্ট প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের আদেশ অনুযায়ী কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী এস এম শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, মামলার বিচার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রশান্ত কুমার হালদারসহ অন্য আসামিদের নগদ অর্থ, গাড়ি, মজুতসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কোনো ব্যক্তি বা সত্তার কাছে হস্তান্তর না করতেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পি কে হালদার বাদে বাকিরা হলেন- কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. নুরুল আলম, পরিচালক জহিরুল আলম, এমএ হাশেম, নাসিম আনোয়ার, বাসুদেব ব্যানার্জি, পাপিয়া ব্যানার্জি, মোমতাজ বেগম, নওশেরুল ইসলাম, আনোয়ারুল কবির, প্রকৌশলী নরুজ্জামান, আবুল হাশেম, মো. রাশেদুল হক, পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, স্ত্রী সুস্মিতা সাহা, ভাই প্রিতুষ কুমার হালদার, চাচাতো ভাই অমিতাব অধিকারী, অভিজিৎ অধিকারী, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক পরিচালক ইরফান উদ্দিন আহমেদ এবং পি কে হালদারের বন্ধু উজ্জ্বল কুমার নন্দী।

এএসএম শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের বলেন, যে সাতজন হাইকোর্টে আবেদন করেছেন, তাঁরা স্থায়ী আমানত হিসেবে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন টাকা জমা দিয়েছিলেন ওই কোম্পানিতে। কিন্তু আমানত পরিপক্ব হওয়ার পর টাকা ওঠানোর জন্য আবেদন করলে তাঁদের জানানো হয়, আইএলএফএসএল আমানতকারীদের টাকা দিতে অক্ষম। এই পরিস্থিতিতে আমানতকারীরা কোম্পানিটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করার জন্য আরজি জানিয়ে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

গত ৮ জানুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এজাহারে বলা হয়েছে, প্রশান্ত কুমার হালদারের নামে-বেনামে ১৮৭ কোটি ৭৮ লাখ ৫২ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ, ৯৯ কোটি ৬১ লাখ ২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট সম্পদের পরিমাণ ২৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার। অনুসন্ধানের সময় পাওয়া তথ্যমতে, ২০১৮ সালে তাঁর বার্ষিক মূল বেতন ছিল ৪৮ লাখ টাকা। এই হিসেবে ১৯৯৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এটা বাদ দিলে তাঁর কাছে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ আছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, প্রশান্ত কুমার হালদারের নামে ঢাকায় বাড়ি, প্লট ও ফ্ল্যাট আছে। এ ছাড়া নামে ও বেনামে একাধিক প্রতিষ্ঠানও আছে বলে দুদকের কাছে তথ্য আছে। জানা গেছে, অবৈধ ব্যবসাসহ বিভিন্ন অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত সম্পদের বেশির ভাগই তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। মামলার তদন্তের সময় তাঁর এসব সম্পদের বিষয়ে আন্তরাষ্ট্রীয় যোগাযোগের মাধ্যমে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হবে। দুদকের এজাহারে আরও বলা হয়েছে, অনুসন্ধানের সময় প্রশান্তকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি হাজির হননি। তিনি দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন বলে তথ্য আছে।

আরও পড়ুন:
৩৫০০ কোটি টাকা নিয়ে চম্পট
প্রশান্ত হালদারের দুর্নীতি: পিপলস লিজিংয়ের ৩ পরিচালককে তলব