Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে কমিটি

• রোববার বিকেলে সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির সভা হয়।
• কমিটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলেছে।
• ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে।

 চলতি এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি। এ বিষয়ে কমিটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে বলেছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি কমিটির পরবর্তী সভায় পরীক্ষা বাতিল হবে কি না সে বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ নেওয়া হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ে গঠিত আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির সভায় এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে। গতকাল রোববার বিকেলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভা সূত্রে জানা গেছে, কমিটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের নমুনা এবং কতক্ষণ আগে তা ফাঁস হয়েছে, হলেও কী পরিমাণ পরীক্ষার্থী প্রভাবিত হয়েছে সে বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য ও গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলেছে।

১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। গত শনিবার পর্যন্ত ১০টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এবার আগাম ঘোষণা দিয়ে প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস চলছে, যা প্রশ্নপত্র ফাঁসের রেকর্ড। প্রথম দুই দিনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে প্রধান করে একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনসহ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই কমিটি গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠকে বসে।

সভা শেষে যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফেসবুকে তারা (প্রশ্ন ফাঁসকারী) বলেছে গণিতের চার সেট প্রশ্নই ফাঁস করেছে। কিন্তু কমিটি দেখেছে একটাও মেলেনি। আবার ইংরেজিতে কিছু মিল পেয়েছে। তখন সাংবাদিকেরা জানতে চান, তার মানে কি এ পর্যন্ত কমিটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো প্রমাণ পায়নি? জবাবে সচিব বলেন, ‘পাব না কেন? কিছু তো আংশিক আছে, কিছু পুরোপুরি আছে।’

পরীক্ষা বাতিল করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, যদি অবজেকটিভ (এমসিকিউ) টাইপের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে থাকে, তাহলে বাকিটার (প্রশ্নপত্রের সৃজনশীল অংশ) পরীক্ষা নতুন করে নেওয়া হবে না, শুধু অবজেকটিভের জন্য পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা চলার এক-দুই বা তিন ঘণ্টা আগে বা আগের দিন যদি ফাঁস হয়ে থাকে তবে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে। তিনি বলেন, এগুলো তাদের পর্যবেক্ষণ। সুপারিশ ঠিক করা হবে ২৫ ফেব্রুয়ারির সভায়। কমিটিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে।

বগুড়া ও আড়াইহাজারে ৩ জন গ্রেপ্তার
বগুড়া থেকে প্রথম আলোর সংবাদদাতা জানান, গতকাল সকালে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বগুড়ায় মো. রবিউল আলম (১৯) নামের এক কলেজছাত্রকে আটক করেছে র‍্যাব। শহরের জহুরুল নগর এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার শিবপুর এলাকায়।

দুপুরে র‍্যাব-১২ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এস এম মোর্শেদ হাসান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন। রবিউলকে আটকের পর তাঁর কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনিও সেই চক্রের একজন সদস্য। চার থেকে পাঁচ সদস্যের এই চক্রের প্রধান সোহান পারভেজ। তাঁর বাড়িও গোপালগঞ্জে। তিনিই রবিউলকে বগুড়ায় পাঠিয়েছেন। তবে কত দিন আগে তিনি এসেছেন তা জানা যায়নি।
র‍্যাব জানায়, ওই চক্রটি প্রথমে ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলে সদস্য (গ্রাহক) জোগাড় করেন। এরপর তারা এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। চক্রটি প্রশ্নপত্রের দাম ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে।

মেজর এস এম মোর্শেদ হাসান বলেন, রবিউলের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, দুটি সিম ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ৪১ পাতার আলামত পাওয়া গেছে। আলামতের মধ্যে আটটি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়া গেছে। এগুলো মূল প্রশ্নের সঙ্গে ১০০ ভাগ মিলে গেছে।

প্রথম আলোর নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, আড়াইহাজারে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল দুপুরে উপজেলার নারিন্দা এলাকায় সুলতানসাদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।