Thank you for trying Sticky AMP!!

পড়ার টেবিলে স্কুলছাত্রী মুন্নীকে হত্যার দায়ে বখাটের মৃত্যুদণ্ড

হুমায়রা আক্তার মুন্নী

পড়ার টেবিলে বখাটের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে স্কুলছাত্রী হুমায়রা আক্তার মুন্নীকে হত্যার দায়ে মো.এহিয়া সরদারকে (২৪) নামের একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সুনামগঞ্জের দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার এ রায় দেন।

২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে সুনামগঞ্জের দিরাই পৌর শহরের মাদানী মহল্লায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হুমায়রা ওই বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তার বাবা হিফজুর রহমান ইটালিপ্রবাসী। তাদের বাড়ি দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের নদগীপুর গ্রামে।

দণ্ডপ্রাপ্ত এহিয়া সরদার দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর গ্রামের ছেলে। এই মামলার অন্য আসামি তানভীর আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করাতে হুমায়রার মা রাহেলা বেগম মাদানী মহল্লায় মেয়ে ও একমাত্র ছেলে মাহিদ আহমদকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। হুমায়রা দিরাই বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করত বখাটে এহিয়া সরদার। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিচার-পঞ্চায়েত হলে এহিয়া ভবিষ্যতে এমন কাজ থেকে বিরত থাকবে বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু এরপরও তার বখাটেপনা থামেনি। হুমায়রাও তার প্রস্তাবে কখনো রাজি হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এহিয়া ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে সাতটার দিকে মাদানী মহল্লার ওই বাসায় গিয়ে হুমায়রার পড়ার টেবিলে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় হুমায়রাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

রায় ঘোষণার পর বখাটে এহিয়া সরদারকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আদালত প্রাঙ্গণ, ১৩ মার্চ। ছবি: খলিল রহমান



এ ঘটনার পরদিন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শক দ্রুত এহিয়াকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। ঘটনার প্রতিবাদে ও এহিয়াকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন মাঠে নামে।

ঘটনার দুদিন পর ১৮ ডিসেম্বর হুমায়রার মা রাহেলা বেগম বাদী হয়ে এহিয়া সরদার ও তার বন্ধু মাদানী মহল্লা এলাকার বাসিন্দা তানভীর আহমদ চৌধুরীকে (২৪) আসামি করে দিরাই থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই তানভীরকে গ্রেপ্তার করে। আর ২০ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে সিলেটের মাসুকবাজার এলাকার একটি বাসা থেকে এহিয়া গ্রেপ্তার হয়।

এই মামলায় পুলিশ গত বছরের ৭ জানুয়ারি আদালতে এহিয়া সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ৬ মে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। এরপর আটজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। আজ রায় ঘোষণার সময় এহিয়া সরদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাহেলা বেগম বলেন,‘আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট। দ্রুত এই রায় কার্যকরের জন্য দাবি জানাচ্ছি।’