Thank you for trying Sticky AMP!!

সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের এমডির জামিন

আদালত

ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনায় করা মামলায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চৌধুরী মোশতাক আহমেদ জামিন পেয়েছেন। আজ বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোহাম্মাদ আবুল হাসান।

দুদকের আইনজীবী বলেন, এ মামলার আসামি চৌধুরী মোশতাক আহমেদ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আসামি অসুস্থ দাবি করে তাঁর পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চান। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দেন তিনি। আদালত উভয় পক্ষের কথা শুনে আসামি চৌধুরী মোশতাক আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত বছরের ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামভিত্তিক এসএ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলম ও ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন।

মামলায় শাহাবুদ্দিন আলমের স্ত্রী ইয়াসমিন আলম এবং ফারমার্স ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক চার শীর্ষ কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও চৌধুরী মোশতাক আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম এম শামীম, ব্যাংকের এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ এবং এসইভিপি ও গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযোগ অনুসন্ধানের সময় রেকর্ডপত্র ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ২০১৫ সালের ১০ মে মেসার্স লায়লা বনস্পতি প্রডাক্টস লিমিটেড নামে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলেন আসামিরা। এর দুই সপ্তাহ আগে তাঁরা ৭০ কোটি টাকার কম্পোজিট লিমিটের জন্য ওই শাখায় আবেদন করেন। শাহাবুদ্দীন আলম প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন আলম চেয়ারম্যান। কোম্পানির বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে ব্যাংকটির ওই শাখায় হিসাব খোলা ও হিসাব পরিচালনা করার দায়িত্ব পান শাহাবুদ্দিন আলম। হিসাবটিতে তেমন লেনদেন না হলেও শাখা থেকে ম্যানেজার অপারেশন জিয়া উদ্দিন আহমেদ, শাখা ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন প্রস্তাবটি ২৮ মে ২০১৫ তারিখে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠান। প্রস্তাবটি ৪ জুন ব্যাংকের ১১তম জরুরি বোর্ড সভায় তড়িঘড়ি করে পাস করার চেষ্টা করা হলেও তা বাতিল হয়। পরে আবার ৬ জুলাই ৩০ কোটি টাকার কম্পোজিট লিমিটের প্রস্তাব গ্রাহকের সিআইবি ছাড়াই পাঠানো হয়। পরে ওই ঋণ প্রস্তাবটি পরিচালনা পর্ষদ ৬ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ভোজ্যতেল আমদানি, প্রক্রিয়াজাত ও সরবরাহের জন্য গ্রাহককে ঋণ দেওয়া হলেও ঋণ বিতরণসংক্রান্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, শাখা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনে অল্প অল্প করে প্রকল্প ভিত্তিতে ঋণ ছাড় করার কথা থাকলেও শাখার কর্মকর্তারা তা না করে মাত্র ৩টি ধাপে অল্প সময়ের মধ্যে ঋণটি বিতরণ করে দেন। এতে গ্রাহক সহজেই উত্তোলিত ঋণটি নিজের মতো করে সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। শাখার মঞ্জুরিপত্রে বিদেশি ঋণপত্রের কথা বলা থাকলেও সব টাকা স্থানীয় ঋণপত্রের বিপরীতে হয়েছে। ঋণপত্র সুবিধা নিয়ে গ্রাহক আসলেই কোনো পণ্য আমদানি করেছেন কি না, তা-ও ব্যাংক যাচাই করেনি। মালামাল আমদানি হয়ে থাকলে তা থেকে উৎপাদিত পণ্য দিয়ে কী করা হলো, এ বিষয়েও শাখার কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। গ্রাহক তাঁর ঋণ হিসাব থেকে ঋণসীমার ২০ কোটি টাকা তোলার পর উল্লেখযোগ্য কোনো লেনদেনও করেননি।