Thank you for trying Sticky AMP!!

ফেলে আসা জীবনের স্মৃতি রোমন্থন

সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে শুভানুধ্যায়ীদের আয়োজনে ‘কবিতা-গান-শিল্পের ঝরনাধারায়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। ২৯ আগস্ট, সিলেট। ছবি: আনিস মাহমুদ

খাপড়া ওয়ার্ড, ষাটের দশকের উত্তাল সময় আর বামপন্থী রাজনীতি থেকে শুরু করে কবিতা, চিত্রকলা, বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, চলচ্চিত্রসহ নানা প্রসঙ্গে স্মৃতির ঝাঁপি মেলে ধরলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের শুভানুধ্যায়ীদের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ফেলে আসা জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করেন।

‘কবিতা-গান-শিল্পের ঝরনাধারায়’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিক্ষা-পেশাজীবী অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। নগরের জিন্দাবাজার এলাকার সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এম হাবিবুর রহমান লাইব্রেরি মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল মতিউর রহমানের কবিতা ‘নদী ও মানুষের কবিতা’ আবৃত্তি করেন।

গান-আবৃত্তি শেষে মতিউর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মো. সালেহ উদ্দিন ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশ। পরে মতিউর রহমান তাঁর সাংবাদিকতা, রাজনীতি ও লেখালেখি বিষয়ে বক্তৃতা দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ।

বক্তৃতায় মতিউর রহমান তাঁর কবিতার উদ্ধৃতি টেনে বলেন, ‘মানুষ হলো নদীর মতো। নদী যেমন পানির রং বদলায়, রূপ বদলায়; কখনো উত্তাল, ভয়ংকর, কখনো শীতল হয়; তেমনি মানুষের মধ্যেও ভালো-খারাপ চিত্র দেখা যায়। একসময় আমি কবি হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে অন্য রাস্তা ধরি।’

সিলেটে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে শুভানুধ্যায়ীদের আয়োজনে ‘কবিতা-গান-শিল্পের ঝরনাধারায়’ অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের একাংশ। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে ঘিরে এই আয়োজন করা হয়। ২৯ আগস্ট, সিলেট। ছবি: আনিস মাহমুদ

চিত্রকলা ও খেলার প্রতি ব্যক্তিগত দুর্বলতা ও ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন দুটি বাংলাদেশ দেখি—একটি নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যটি একটি গোষ্ঠীর দ্বারা টেনে পেছনে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে সব শ্রেণি-পেশার লোক রয়েছেন। আমরা সেসব মানুষের হাত থেকে পরিত্রাণ চাই। আমাদের দেশকে অগ্রসরমাণ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। আমরা সুন্দর বাংলাদেশ চাই। সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই।’

মতিউর রহমানের বক্তৃতার অনেকটা জুড়ে খাপড়া ওয়ার্ড নিয়ে স্মৃতিচারণা ছিল। তিনি খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকাণ্ড-১৯৫০, আকাশভরা সূর্যতারা: কবিতা-গান-শিল্পের ঝরনাধারায়, চে: বন্দুকের পাশে কবিতা, ইতিহাসের সত্য সন্ধানে: বিশিষ্টজনদের মুখোমুখি বইগুলো লেখার ইতিহাস নিয়েও কথা বলেন।

লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশ অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর আলোয় চারপাশ আলোকিত হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য সালেহ উদ্দিন সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, ‘মতিউর রহমানের পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা শুনতে শুনতে আমরা নিজেদের ফেলে আসা দিনগুলোতে হারিয়ে গিয়েছিলাম।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি আরশ আলী, লেখক রফিকুর রহমান, কবি তুষার কর ও শুভেন্দু ইমাম, আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক মুহিতুল বারী, প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির প্রধান মুনির হাসান, উদীচী সিলেটের সাবেক সভাপতি এ কে শেরাম ও সভাপতি এনায়েত হাসান মানিক, অনুবাদক সুরেশ রঞ্জন বসাক ও মিহিরকান্তি চৌধুরী, গবেষক নন্দলাল শর্মা ও মোস্তাক আহমাদ দীন, কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক মিসবাহ উদ্দিন, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী, উন্নয়ন-সংগঠক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হীরা লাল গোপ, নাট্যসংগঠক এনামুল মুনীর, শামসুল বাসিত, রজতকান্তি গুপ্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।