Thank you for trying Sticky AMP!!

বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই বসতি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন কড়ইতলা এলাকার বাসিন্দারা। ছবিটি শনিবার সকালে তোলা। ছবি: সোয়েল রানা

নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, আজ শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। 

স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা এবং ধুনট উপজেলার ২৫ থেকে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর ডান তীরবর্তী কামালপুর, কুতুবপুর ও চন্দনবাইশা ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় লোকজন বাঁধে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
আশ্রয় নেওয়া লোকজনের অভিযোগ, খোলা আকাশের নিচে তাঁরা গবাদিপশু আর মানুষে একসঙ্গে বসবাস করছেন। আশ্রয়শিবিরে বিরাজ করছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট; নেই পর্যাপ্ত টিউবওয়েল।
সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের কাজলা, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল, চালুয়াবাড়ী এবং সোনাতলা উপজেলার পাকুল্যা ও তেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতেও বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে শ্রেণিকক্ষে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলার ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দুটি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যা প্লাবিত হয়েছে।
বগুড়া জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা শাহারুল মোহাম্মদ আবু হেনা বলেন, শনিবার পর্যন্ত সারিয়াকান্দি উপজেলার ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দুটি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর, কুতুবপুর ও চন্দনবাইশা ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় এসব গ্রামের দুর্গত মানুষ পার্শ্ববর্তী বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় আরও বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ছয়টায় পাউবো যমুনা নদীতে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করেছিল ১৬ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আবু হেনা বলেন, আজ শনিবার পর্যন্ত সারিয়াকান্দি উপজেলার দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই শনিবার সকালে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া এক হাজার পরিবারের মধ্যে স্থানীয় সাংসদ আবদুল মান্নান ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন। খাবার পানির সংকটের বিষয়টি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হবে।
পাউবোর বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনায় বিপৎসীমা ধরা হয় ১৬ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার।
ছয় দিন ধরে আশ্রয়শিবিরে পানিবন্দী মানুষজন দুর্ভোগ পোহালেও আজ এক হাজার পরিবারের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনের সাংসদ আবদুল মান্নান।
পুরো জেলায় ঠিক কতজন মানুষ বা কতটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী, সেই পরিসংখ্যান জানাতে পারেনি জেলা ত্রাণ বিভাগ।