Thank you for trying Sticky AMP!!

বহিষ্কৃতরাই স্থান পেলেন ছাত্রলীগের কমিটিতে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অস্ত্র মামলার আসামি এবং চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন ঘটনায় বহিষ্কৃত কমপক্ষে ১১ জন স্থান পেয়েছেন। কমিটির সহসভাপতি করা হয়েছে বিবাহিত দুজনকে।
গত বুধবার ১৬১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। একই দিন ছাত্রদের সাতটি হলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে সেখানে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম রয়েছে। এর আগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মাহমুদুর রহমানকে সভাপতি ও রাজীব আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধেই শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১০ সালের ৫ জুলাই আল-বেরুনী হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিনিময় ও হলের ছাদ থেকে কয়েকজন ছাত্রকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ১৭ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৩ জনকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত কর্মীদের মধ্যে শুভাশিস কুণ্ডু ও রাসেল মিয়া ওরফে স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সহসভাপতির পদ পেয়েছেন।
অস্ত্র মামলার আসামি মোর্শেদুর রহমান ওরফে আকন্দ সাংগঠনিক সম্পাদক ও আবদুল মাজেদুর রহমান ওরফে সীমান্ত বিতর্ক ও নাট্যবিষয়ক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। গত ১৭ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরদিন সকালে পুলিশ দুটি হলে তল্লাশি চালিয়ে ছয়টি গুলিসহ একটি পিস্তল ও একাধিক দেশি অস্ত্র উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করে মোর্শেদ, মাজেদ ও বোরহান উদ্দিন নামের তিন কর্মীকে।
মোর্শেদ ও মাজেদ দাবি করেন, ওই সময় ষড়যন্ত্র করে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছিল। পরে তাঁদের মামলা প্রত্যাহারও করা হয়।
এর আগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর মাজেদের সঙ্গে মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের কর্মী নূরনবীর হাতাহাতির জের ধরে দুই হলের ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় মাজেদ ও নূরনবীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। নূরনবী পেয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ।
এ ছাড়া বহিষ্কৃত কর্মীদের মধ্যে সুবল দেবনাথ ওরফে আকাশ সহসভাপতি ও তানভীর হাসান খান সহসম্পাদকের পদ পেয়েছেন। গত পয়লা বৈশাখে ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনায় তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। চাঁদাবাজির ঘটনায় বহিষ্কার হওয়া নাজমুল হক ভূঁইয়া পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও মাহমুদুল হাসান ওরফে মিঠু পেয়েছেন উপ-ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদকের পদ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ২ আগস্ট তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটের একটি কনফেকশনারি দোকানে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে কর্মচারীকে মারধর করেন।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইতিহাস বিভাগের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিএনসিসি ক্যাডেট ও রোভার স্কাউট সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় বহিষ্কৃত মহিতোষ রায় ওরফে টিটু ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও আসফিকুর রেজা ওরফে সাগরকে কার্যকরী সদস্য এবং তাইমুর রহমান ওরফে রাসেলকে মীর মশাররফ হোসেন হল কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিবাহিত মুজাহিদ আতিক ও সাইফুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সহসভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান বলেন, কমিটিতে বহিষ্কৃত ছাত্ররা থাকতেই পারেন। তাঁদের তো শোধরানোর সুযোগ দিতে হবে। রাজীব আহমেদ বলেন, অভিযুক্ত কেউ কমিটিতে থাকলে তা কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হবে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তা খুঁটিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।