Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশি নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছে মিয়ানমার

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্য নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।

বিজিপির আরাকান রাজ্যের সিতুইয়ের পুলিশ কর্নেল তুনও গতকাল শুক্রবার দেশটির দ্য ইরাবতী পত্রিকাকে বলেন, ‘২৮ মে সংঘর্ষ শুরু হলে অন্য পক্ষের (বাংলাদেশ) একজন আমাদের পুলিশ বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন।’
গত বুধবার সকালে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিজিবির সদস্যরা টহল দেওয়ার সময় সীমান্তের ওপার থেকে বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা। ওই গোলাগুলির পর থেকে বিজিবির নায়েক মিজানুর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিজিবির সদস্য মিজানুর গুলিবিদ্ধ হলে তাঁকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়। মিজানুর কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ভেলানগর গ্রামের বাসিন্দা।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, বুধবার দুপুরে মিয়ানমারে মিজানুরের মৃত্যু হয়। এরপর তাঁর লাশটি সেখানকার সীমান্তের ১ নম্বর সেক্টরে নেওয়া হয়।
ঘটনার পর বিজিপি প্রচার করে যে গুলিতে আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশন) বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের এক সদস্য মারা গেছেন।

সীমান্তে গুলিবর্ষণের প্রতিবাদের পাশাপাশি বিজিবির নিখোঁজ সদস্যকে ফেরত দিতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে বাংলাদেশের কাছ থেকে দাবি জানানো হয়েছে।

ইয়াংগুনের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশ না করে দূতাবাসের এক মুখপাত্র মিয়ানমার টাইমসকে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁকে (বিজিবি সদস্য) জীবিত বা মৃত অবস্থায় ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি আমরা।’


সম্পর্কে প্রভাব নয়: ইয়াংগুনের বাংলাদেশ দূতাবাসের মুখপাত্র বলেছেন, সীমান্তের এ ঘটনা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করবে না বলে তাঁদের বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘কোনো ক্ষতি হয়নি। এটা ছোট একটা সীমান্ত। মাঝেমধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা নিয়মিত বৈঠক করছি।’
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সর্বশেষ সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে ইয়াংগুনের বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই মুখপাত্র কিছুই জানাতে পারেননি।


ঘটনার সূত্রপাত: স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয় দুই দিন আগে। বুধবার সকালে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিজিবির সদস্যরা টহল দেওয়ার সময় সীমান্তের ওপার থেকে বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা। ওই গোলাগুলির পর থেকে বিজিবির নায়েক মিজানুর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।

বিজিপির দাবির বরাতে মিয়ানমারের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় বাংলাদেশভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) জড়িত। তারা আরএসওর একজন সদস্যকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া সংঘর্ষের পর অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গতকাল শুক্রবারও বিজিবির ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছে বিজিপি। জবাবে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছুড়েছে। বেলা আড়াইটা থেকে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টা গুলিবিনিময় হয়।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে গোলাগুলি থেমে গেছে। এখন সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা চলছে।