Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ

বাংলাদেশে মানবাধিকাররক্ষীদের (মানবাধিকারকর্মী) ওপর শারীরিক হামলা এবং হত্যাপ্রচেষ্টার খবরে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এক কর্মকর্তা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ওই কর্মকর্তা একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ ভেঙে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যেকোনো ক্ষেত্রে এই শক্তি প্রয়োগের কারণে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

মানবাধিকাররক্ষীদের অবস্থার বিষয়ে জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার মার্গারেট সেকাজ্ঞা গত সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে পেশ করা প্রতিবেদনে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে মানবাধিকাররক্ষীদের কথিত হত্যাপ্রচেষ্টার কোনো নির্দিষ্ট বিবরণ প্রতিবেদনে নেই। এতে বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশের মানবাধিকাররক্ষীদের অবস্থা তুলে ধরা হয়।

৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ২৫তম অধিবেশনে মানবাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাতিসংঘের নিয়োজিত স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা তাঁদের প্রতিবেদন পেশ করছেন। অধিবেশন চলবে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এবং অধিবেশনের শেষ দিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে প্রস্তাব পাস হতে পারে।

মার্গারেট সেকাজ্ঞা মানবাধিকাররক্ষীরা যাতে দেশটিতে নিরাপদে কাজ করতে পারেন এবং তাঁদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা যাতে অক্ষত থাকে, সে ধরনের পরিবেশ তৈরির জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বেসরকারি সংস্থা বা এনজিওগুলোর দপ্তরে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি ও ল্যাপটপ জব্দ করা এবং এনজিও কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার, তাঁদের আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের সুযোগ না দেওয়ার খবরেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

সোমবারের অধিবেশনে লয়ার্স রাইটস কানাডা এবং লয়ার্স ফর লয়ার্স নামের দুটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের ওপর নজরদারি ও হয়রানির অভিযোগ করেন। অধিকারের দুই কর্মকর্তা আদিলুর রহমান খান এবং নাসিরউদ্দিন এলানকে যথাক্রমে ৫২ ও ২৫ দিন বিনা বিচারে আটক রাখার বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা ও বিচার শুরুর আগেই তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ২০১৩-এর ৫-৬ মে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে এক প্রতিবেদনে ৬১ জন নিহত হওয়ার কথা তুলে ধরার কারণেই তাঁদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়।

স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট সংসদে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন সংশোধনের বিষয়ে তাঁর উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এই সংশোধনী মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে পেশ করা প্রতিবেদনে মার্গারেট সেকাজ্ঞা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, তিনি ছয়টি বিষয়ে সরকারের কাছে তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর পাঁচটির প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছে। তাঁর আশা, সরকার শিগগিরই এগুলোর বিস্তারিত জবাব দেবে। তিনি জানান, মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে দেশটি সফরের জন্য তাঁর অনুরোধে এখনো সরকারের সম্মতি মেলেনি।