Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ ব্যাংককে ঠুঁটো জগন্নাথ বললেন মেনন

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

ব্যাংক খাত নিয়ে জাতীয় সংসদে কঠোর সমালোচনা করেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তাঁর ভাষায়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ঠুঁটো জগন্নাথ।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মেনন এ কথা বলেন।

বাজেটের বিভিন্ন ইতিবাচক দিক ও সরকারের অর্জন তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যাংক খাত নিয়ে সমালোচনা করেন সরকারের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তুলে ধরেন অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্র।

মেনন বলেন, ‘বাজেটে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে ব্যাংক মালিকেরা। অথচ এই ব্যাংক খাতে চলছে অবাধ লুটপাট, ঋণখেলাপ আর অর্থ পাচারের মহোৎসব। খেসারত দিচ্ছে দেশের মানুষ। করের টাকা থেকে এই ঘাটতি মূলধন পূরণ করা হচ্ছে। ব্যাংকের ক্ষেত্রে করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, সুদের হ্রাসকৃত হার ঠিক না রাখলে আবার সেটা আরোপ করা হবে। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা। আমরা দেখেছি সম্প্রতিকালে আইন সংশোধন করে ব্যাংকগুলোকে পারিবারিক মালিকানায় তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাংক মালিকেরাই গার্মেন্টসের মালিক, বিমার মালিক, আবাসন কোম্পানির মালিক। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের ২২ পরিবারের কাছে মাথানত করেননি। আর এখন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন নির্ধারণ করে দিচ্ছে সিআরআর কত হবে, ঋণের সুদ কত হবে, আমানতের সুদ কত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ঠুঁটো জগন্নাথ।’

মেনন বলেন, বাজেটে গরিব, মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ে টান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার না কমানোয় তিনি অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে বলেন, কিন্তু বাজেট-পরবর্তীকালে যে সুদের হার কমবে না, এমন নিশ্চয়তা অর্থমন্ত্রী দেননি।

অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, খালি চোখেই দেখা যায় সমাজের ওপরতলার কিছু মানুষ ভোগ-বিলাস-লালসার এক অশালীন পর্যায়ে চলে গেছে। উচ্চতর আয়বৈষম্যের দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। ২০১৮ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষাতেও এ চিত্র দেখা যায়।

মেনন বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। কিন্তু বন্দুকযুদ্ধ সমাধান নয়। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রচলিত আইনে মাদক ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। শুধু চুনোপুঁটি ধরলে চলবে না। রাঘব বোয়ালদের জালে আটকাতে হবে। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এবার দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নির্দেশ প্রদান করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে মেনন বলেন, আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোটের বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু ভোটের হিসাব করতে গিয়ে হেফাজতের তোষণ, কারিকুলাম পাল্টে দেওয়া, ভাস্কর্য অপসারণ, সংসদের কিছু আসন দিয়ে খুশি করা—এসবে হবে নির্বুদ্ধিতা। সাপ খোলস বদলায়, কিন্তু দাঁতের বিষ ঠিকই থাকে।